বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনী। ১৯৮০ সালে বিয়ে করেন এই দুই তারকা। চলতি বছরই দাম্পত্য জীবনের ৪২ বছর পার করলেন তাঁরা। ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর বিয়ে নিয়ে আজও চর্চার শেষ নেই। বলিউডে দ্বিতীয় বিয়ের উদাহরণ অসংখ্য। তবে খুব কম তারকার বিয়ে নিয়েই বোধ হয় এত আলোচনা হয়েছে। এর অবশ্য কারণও রয়েছে! হেমা মালিনী ও ধর্মেন্দ্রর প্রেমকাহিনি সিনেমাকেও হার মানায়।
সময়টা ১৯৭০ সাল, ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’র সেটে প্রেমে পড়েন ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। অথচ তখন ঘরে স্ত্রী প্রকাশ কউর, দুই ছেলে সানি ও ববি দেওল বেশ ছোট। দাম্পত্য জীবন যে সুখের ছিল না এমন কোনো তথ্য জানা যায় না। কিন্তু হেমাকে উপেক্ষা করতে পারেননি ধর্মেন্দ্র। হেমাও সাড়া দিতে দ্বিধা করেননি। ধর্মেন্দ্র প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চাননি। সতিনে আপত্তি জানাননি হেমা মালিনীও। এমনকি সঞ্জীব কাপুর এবং জিতেন্দ্রের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিপত্তি বাধায় হিন্দু পারিবারিক আইন। হিন্দু বিবাহ আইনে একজন পুরুষ একসঙ্গে একাধিক স্ত্রী রাখতে পারেন না। কিন্তু দুজনে বিয়ের জন্য এতটাই উদ্গ্রীব ছিলেন যে বিকল্প পথ খুঁজতে শুরু করেন।
এ সময় ধর্মেন্দ্র জানতে পারেন, মুসলিম পারিবারিক আইনে এ ধরনের বাধা নেই। একজন মুসলিম পুরুষ একসঙ্গে চারটি স্ত্রী রাখতে পারেন। বিয়ের জন্য এই সুযোগই কাজে লাগান ধর্মেন্দ্র। ১৯৭৯ সালে তাঁরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ধর্মেন্দ্র নাম পরিবর্তন করে দিলওয়ার খান কেওয়াল কৃষ্ণ এবং হেমার নাম রাখা হয় আয়েশা বি আর চক্রবর্তী।
হেমার পরিবার কখনোই চায়নি একজন বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হোক। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েই ধর্মেন্দ্রকে বিয়ে করেন হেমা। এরপর একসঙ্গে ৪৩ বছর কাটিয়ে ফেললেন দুজনে।
ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী কখনোই তাঁদের ধর্মান্তর নিয়ে কথা বলেননি। এটি দীর্ঘদিন গোপনই ছিল। তবে ২০০৪ সালে প্রকাশ পেয়ে যায় যখন ধর্মেন্দ্র বিজেপির মনোনয়ন নিয়ে রাজস্থান রাজ্যের বিকানের আসনে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মনোনয়নপত্রে তিনি নাম লেখেন, দেওল ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষ্ণ। আর ফরমে শুধু প্রথম স্ত্রীর নাম লিখেছিলেন তিনি।
ওই সময় বিষয়টি জনসমক্ষে আনে বিরোধী দলগুলো। ধর্মেন্দ্র অবশ্য তাঁর ইসলাম গ্রহণের কথা গুজব বলে উড়িয়ে দেন। তখন দিল্লির আউটলুক ম্যাগাজিন মুসলিম রীতিতে হেমা মালিনীর সঙ্গে ধর্মেন্দ্রর নিকাহনামার (কাবিননামা) একটি ফটোকপি প্রকাশ করে।