1. admin@crimenews24.net : cn24 :
  2. zpsakib@gmail.com : cnews24 :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সিরাজগঞ্জ র‌্যাব-১২ এর অভিযানে ৬১ কেজি গাঁজাসহ আটক ৪ ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়ে আওয়ামী লীগ বধ্যভূমি তৈরি করেছিল: টুকু সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন নিজের চেহারা একবার আয়না দিয়ে দেখুন: মৌলভীবাজারে জামায়াতের আমীর শ্রীমঙ্গলে শিশু ধর্ষণ মামলায় আটক ২ তানোরে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণায় প্রথম স্ত্রী নিঃস্ব সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ রাজশাহীতে হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আটক- ৮ সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে সুন্দরবনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর

চুয়াডাঙ্গা হানাদার মুক্ত দিবস আজ

রবিউল ইসলাম রবি, বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৬৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা হানাদার মুক্ত দিবস আজ ৭ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে শত্রুমুক্ত হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা। বাঙালির ইতিহাসে গৌরবময় অধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ। আর এই যুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিবাহিনী অবদান ছিল অপরিসীম।

 

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আয়োজনে নানা কর্মসূচিতে পালন করা হচ্ছে দিবসটি।

স্বাধীনতার সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ভারত সীমান্তবর্তী এই চুয়াডাঙ্গার রয়েছে গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার পর চুয়াডাঙ্গায় সর্বপ্রথম ২০৪ জন মুজাহিদ ও আনসারকে একত্রিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন দক্ষিণ পশ্চিম রণাঙ্গনের হেড কোয়ার্টার স্থাপন করা হয় এ জেলায়। এখান থেকেই কার্যক্রম শুরু করে তৎকালিন রেডক্রস বর্তমান রেডক্রিসেন্ট। ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন হলেও মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ১৯৭১ এর ১০ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় হওয়ার কথা ছিল ওই শপথ। ১০ এপ্রিল ভারতের আগরতলায় ২৮ জন সংসদ সদস্যের (এমপি) উপস্থিতিতে এক সভায় অস্থায়ী সরকারের রাজধানী ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল চুয়াডাঙ্গায় করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তটি নিরাপত্তাজনিত কারণে গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু খবরটি দ্রুত বিদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানী বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয় চুয়াডাঙ্গা। এরপরই চুয়াডাঙ্গার ওপর ব্যাপকভাবে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে হানাদার বাহিনী। একই সঙ্গে যশোর সেনানিবাস থেকে হানাদার বাহিনীর একটি দল ১৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় প্রবেশ করে। চুয়াডাঙ্গায় প্রবেশের পরই হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অনেক মানুষকে হত্যা করে শহর দখলে নেয়। পরে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের সদর দপ্তর চুয়াডাঙ্গা থেকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।

 

মুক্তিযুদ্ধের সময়ের যুবনেতা বর্তমান চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দার সেলুনের নেতৃত্বে ট্রেনিং নিতে ভারতে যায় চুয়াডাঙ্গার একদল তরুণ। ২২ এপ্রিল ভারতের হৃদয়পুর শিবিরে ১২০ জন যুবক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম ক্যাম্প চালু করা হয়। চুয়াডাঙ্গা ৮ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে চলতে থাকে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রণাঙ্গনে গেরিলা যুদ্ধ। ৫ আগস্ট চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহের পার্শ্ববর্তী বাগোয়ান গ্রামে পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাদের জগন্নাথপুর গ্রামের দাফন করা হয়, যা এখন আট কবর নামে পরিচিত। এছাড়া ৭ আগস্ট জীবননগর থানার ধোপাখালি সীমান্তে নিয়মিত বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানী বাহিনীর মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাঁচজন শহীদ হন। সেপ্টেম্বরে ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার হিসেবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল মনজুর দায়িত্ব নেন। তিনি যুদ্ধ বেগবান করা ও বিজয় অর্জনের লক্ষে যুদ্ধ কৌশলে পরিবর্তন আনেন। ২৬ নভেম্বর পাকিস্তানী বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে জীবননগরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৪ ডিসেম্বর মুক্ত হয় দর্শনা। ৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী মেহেরপুর থেকে ২৮ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে চুয়াডাঙ্গায় আসে।

চুয়াডাঙ্গার মুক্তিবাহিনীরা দর্শনার মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় শহরের মাথাভাঙ্গা ব্রিজে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় হানাদার বাহিনী। মিত্রবাহিনী ও চুয়াডাঙ্গার মুক্তিবাহিনী পৌঁছালে ৭ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীরা চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা ছেড়ে কুষ্টিয়ার দিকে চলে যায়। শত্রুমুক্ত হয় চুয়াডাঙ্গা। স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

 

জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মালিক জানান, সেদিন স্বদেশের পতাকা উড়িয়ে ‘জয় বাংলা’ধ্বনিতে আনন্দ উল্লাস করেন এলাকার মুক্তিকামী মানুষ। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বহু স্মৃতি চিহ্ন। বর্তমান সরকার ২০১৩ সালে জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় একাত্তরের গণহত্যার স্মারক বধ্যভূমি সংস্কার করে। জেলা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে স্থাপন করা হয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক।

 

জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গায় মোট বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ১ হাজার ৬৩১ জন। এর মধ্যে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ১৫৬ জন। এ রণাঙ্গনে শহীদ হয়েছেন ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এ জেলায় দুই জন বীর প্রতীকও রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার বিশেষ অবদানের ফলস্বরুপ যথাযথ মর্যাদা চায় জেলাবাসী। বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানীর স্বীকৃতি দাবি করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর ....
© All rights reserved © 2022 crimenews24.net
Design & Developed By : Anamul Rasel