লালমনিরহাট পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ (৬ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে লালমনিরহাট হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে, করা হয়েছে আলোকসজ্জা।
এইদিন ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও বীরমুক্তিযোদ্ধারা লালমনিরহাট শহরকে পাক হানাদার মুক্ত করতে তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের যৌথ আক্রমনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বিপর্যয়ের মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরাজয় নিশ্চিত জেনে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে পাক হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর, আলসাম্স ও তাদের দোসর অবাঙ্গালীরা দুটি স্পেশাল ট্রেন যোগে রংপুর ও সৈয়দপুরে পালিয়ে যায়। ফলে লালমনিরহাট জেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।
তবে এর আগেরদিন ৫ ডিসেম্বর’৭১ সন্ধ্যায় লালমনিরহাট রেলওয়ে রিকশা স্টানে পাক হানাদার বাহিণী ও রাজাকারদের যোগ সাজসে গণহত্যা চালানো হয়। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, বুদ্ধিজীবিসহ ৩ শত ৭৩ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী। পরে গণহত্যায় নিহত লোকদের রেল স্টেশনের দক্ষিণ পাশে একটি ডোবায় ফেলে দেয়া হয়। বর্তমানে সেখানে গড়ে উঠেছে একটি গণকবর।
লালমনিরহাট অঞ্চল ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অধীনে। দেশের অভ্যন্তরে থাকা ৬নম্বর সেক্টরটি ছিল পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন এম, খাদেমুল বাশার। তার দক্ষ নেতৃত্বে ও সাহসী পদক্ষেপেই লালমনিরহাটে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবী, স্বাধীনতার ৫২ বছর পেয়িয়ে গেলেও গণ কবরগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অবহেলা অযত্নে পড়ে রয়েছে অনেক গণকবর। তাদের দাবী গণকবরগুলো সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হোক।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, ৬ ডিসেম্বর লালমনিরহাট মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সভায় লালমনিরহাটের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ অংশ নেবেন।