বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে ইছাপুরা গ্রামের চৌরাস্তা নামক স্থানে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
জহিরুল ইসলাম ওরফে হাতকাটা মামুন (৫০) ফরিদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ইউপি সদস্য মামুন হত্যাকাণ্ডের সত্যতা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান সিকদার।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান রাতে গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়েছি ইউপি সদস্য খুন হয়েছেন। এলাকাটি দুর্গম এবং উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সেখানে পৌঁছতে সময় লাগছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার আবদুর রহিম প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে গণমাধ্যমকে জানান, জহিরুল হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা করে। দৌড়ে সড়কের পাশে বাগানের মধ্যে ঢুকে পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। সব কটি কোপ তার মাথায় লাগে। এতে মগজ বের হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হামলকারীরা গুলি করলেও তা তার গায়ে লাগেনি।
এলাকাবাসীরা বলছেন, জহিরুল এলাকায় ভয়ংকর সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সে টানা তিনবার নির্বাচিত ইউপি সদস্য। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ মার্চ রাতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের সোনাপুরা গ্রামে পূর্বশক্রতার জেরে বাড়িতে ঢুকে তিন ভাইকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তারা হলেন রবিউল ইসলাম ওরফে রনি মোল্লা, শহিদুল ইসলাম ওরফে সোহেল (২৫) ও তৌহিদুল ইসলাম ওরফে তৌকির (২২)।
পরে তাদের তিনজনকে স্পিডবোটে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে রবিউল মারা যান।
রবিউলের বাবা মো. ইয়াছিন মোল্লা গত বছরের ২১ এপ্রিল বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছিল জহিরুলকে। পরে ওই বছরের ৩০ এপ্রিল র্যাবের-৮ সদস্যরা জহিরুলকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছিলেন।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১১ জুন সন্ধ্যায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নে মহিউদ্দিন হাওলাদার নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন জহিরুল।
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, এছাড়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে কয়েক বছর আগে জহিরুলের ডান হাত কেটে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। তার বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি, মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে বাকেরগঞ্জ ও বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা রয়েছে।