সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে দিচ্ছে সেটেলমেন্ট অফিসগুলো। এসব অফিসের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী মানুষকে ফতুর করে দিচ্ছে। আর মানুষ তাদের এই অনৈতিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছেন বাপ-দাদার ভিটেমাটি টিকিয়ে রাখার জন্য। বছরের পর বছর ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এভাবে মানুষের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নিলেও মানুষ তাদের কাছে অসহায়। দুর্নীতিগ্রস্ত এই লোকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও যেন কেউ নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস। কয়েক বছর ধরে ওই এলাকার ভূমি জরিপের কাজ চলছে। স্থানীয় সূত্র জানা যায়, প্রতিটি ধাপে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ঘুষ-দুর্নীতির বিষয়টি প্রায় সবারই জানা। জমির কাগজপত্র সঠিক থাকলেও ঘুষ ছাড়া রেকর্ড মেলে না। ঘুষ না দিলে মাসের পর মাস হয়রানির শিকার হতে হয় ভূমি মালিকদের। আবার চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ পেলে রাতের বেলাতেও অফিসের দরজা-জানালা বন্ধ করে আলো জ্বালিয়ে লেখা হয় রায়।
তবে সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন মৌজার কাজ শুরুতেই ঘুষ লেনদেনের মাত্রা বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিতীয় ধাপে তা কয়েক গুন বেড়েছে। দালালদের সহযোগিতায় ঘুষ নিয়ে জরিপ থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ চলছে বেশ জোরেশোরে। ভূক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে ভয়ে মুখ খোলে না, হয়তো জানাজানি হলে তার জমি রেকর্ড হবে না।
অনুসন্ধানী তথ্যমতে, চলমান কাজের ২ নং সীটের জমির পরিমাণ অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৭ হাজার ৫ শ টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার, ১৫ হাজার, হাজার, ২০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার তথ্য আসে এই প্রতিবেদকের হাতে। এমনি অত্র এলাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন প্রতিদিনই সেটেলমেন্ট অফিস লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্য করে নিয়ে যাচ্ছে টাকার বস্তা ।
অনুসন্ধানে গিয়ে জানাযায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদ এর ৮ নং ওয়াডে টেবিল চেয়ার পেতে বসেছে সেটেলমেন্ট অফিস। রয়েছে মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ সাইফুল ইসলাম নামের দুজন এবং মোঃ মজিবুর রহমান চারজন সার্ভেয়ার এবং অফিস নিয়ন্ত্রণ করছেন পেশকার মোঃ আরিফুল ইসলাম । আর ঘুষ লেনদেন এর মাধ্যম হিসেবে কাজ করছন ফাটা পাড়ার স্কুলপাড়া এলাকার মৃত. একরামুল হক এর ছেলে কাবির মাষ্টার, ফাটাপাড়া মরাপাগলা এলাকার মৃত.গিয়াস উদ্দিন ডাক্তারের ছেলে মেজর এবং মৃত. আব্দুল গনি’র ছেলে এন্তাজ আলিসহ আরও কয়েকজন দালাল । আর এসব দালালদের মাধ্যে কাবির মাষ্টারের হাতে মৃত. আমজাদ আলীর ছেলে মান্নানের স্ত্রী মোসাঃ রেশন বেগম তার নিজ বাড়ীতে ২৩ নভেম্বর বিকেলে নগদ ৪৫ হাজার টাকা তুলে দেন। ঐ সময় দালাল কাবির মাষ্টারের সাথে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল খালেক নামের আরেক শিক্ষক। তাবে কাবির মাষ্টার ১৫ হাজার টাকা নিজ পকেটে রেখে ৩০ হাজার টাকা দেন সেটেলমেন্ট অফিসের সার্ভেয়ারদের নিকটে ।
এছাড়া ও দালাল মেজরের মাধ্যমে ৭ হাজার ৫শ টাকা দেন রামকৃষ্ণপুর মরা পাগলা এলাকার মৃত তৌহিদ মিস্ত্রির ছেলে ভ্যান চালক মোঃ তরিকুল ইসলাম।
শুধু তাই নয় প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহকালে দালাল এন্তাজ প্রতিবেদক কে প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে বাধাঁ প্রদান করেন । এমন কি প্রতিবেদক কে অর্থ প্রদানের অপচেষ্টা করেন ।
উৎকোচ গ্রহনের বিষয়ে উপস্থিত ৪ জন সার্ভেয়ারদের নিটক জানতে চাইলে , তারা বিড়ম্বনা পড়ে ক্যামেরার সামনে কোন কথা বলতে চাইনি ।
এ বিষয়ে সার্কেল অফিসার ও সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার এ কে এম জিয়াউল করিম এর সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ না করাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি ।
পরে রাজশাহী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার ( উপ সচিব) ড. সেটারা বেগম বলেন বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক । তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গালিব খাঁন এর সাথে মুঠোফনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও
তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে এর যথাযথ প্রতিকার করার জন্য জেলা প্রশাসকসহ উর্দ্ধতন প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।
এ জাতীয় আরো খবর ....