গাজার বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একমত হতে পারেনি আরব নেতারা। তবে বৈঠকে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক যে পদক্ষেপের আশা করা হয়েছিল সে বিষয়ে কোনো অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি নেতারা।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত নিয়ে শনিবার (১১ নভেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে জরুরি সম্মেলনে বসেন আরব লিগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) নেতারা। গাজার পরিস্থিতি নিয়ে করণীয় ঠিক করতে জরুরি এ সম্মেলনের আহ্বান করা হয়।
ওই বৈঠকে আলজেরিয়া, লেবাননসহ কয়েকটি দেশ ইসরায়েলসহ এর মিত্রদের জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধে হুমকি প্রদানের প্রস্তাব দেয়। একই সঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব লিগের যেসব দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, তা ছিন্ন করার প্রস্তাব দেয় তারা। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনসহ অন্তত তিনটি দেশ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলের ওপর যেন তারা তেল ও পণ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলকে প্রতিহত করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ইসরায়েলকে প্রতিহত করায় আমরা হামাসের হাত চুম্বন করি।
অপরদিকে ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য দখলদার (ইসরায়েল) কর্তৃপক্ষ দায়ী।
সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি বলেন, ‘আত্মরক্ষা বা কোনো কিছুর অজুহাতে’ গাজার সাধারণ মানুষকে সমষ্টিগত শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজন করতে হবে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, এ সম্মেলনের কোনো অর্থ থাকবে না।
গত ৭ অক্টোবর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গাজার ১৫ হাজারেরও বেশি জায়গায় হামলার কথা স্বীকার করেছে ইসরায়েল। এতে ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর গাজায় এ পর্যন্ত ৩২ হাজার টন বিস্ফোরক ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, আবাসন ও অবকাঠামো খাতের প্রতিটিতে ২০০ কোটি ডলার করে ক্ষতি হয়েছে।