দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দ্বার খুলছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের। শনিবার (২৮ অক্টোবর) এই মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি চালু হলে মাত্র তিন মিনিটে পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা যাতায়াত করা যাবে।
এদিকে টানেলে কোন কোন যানবাহন চলবে, তা নির্ধারণ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ১২ ধরনের যানবাহনের জন্য টোলহার প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে নির্মিত শাহ আমানত সেতুর বিবেচনায় টানেলের টোলহার নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে টানেলে সেতুর তুলনায় আড়াই থেকে ছয় শতাংশ বেশি টোল প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে টানেল দিয়ে কোনো থ্রি হুইলার ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না বলে জানা গেছে।
সেতু কর্তৃপক্ষের নির্ধারণ করা টোল অনুযায়ী, টানেলে প্রাইভেটকার ও জিপ চলাচলে টোল দিতে হবে ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস ২৫০ টাকা, পিকআপ ২০০ টাকা, ৩১ বা তার চেয়ে কম সিটের বাস ৩০০ টাকা এবং ৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসনের বাস চলাচলে দিতে হবে ৪০০ টাকা টোল।
এ ছাড়া পাঁচ টন ধারণক্ষমতার ট্রাক থেকে টোল নেওয়া হবে ৪০০ টাকা, পাঁচ থেকে আট টনের ট্রাকে ৫০০ টাকা এবং আট থেকে ১১ টনের ট্রাক থেকে ৬০০ টাকা টোল আদায় করা হবে। পাশাপাশি তিন এক্সেল পর্যন্ত ট্রাক চলাচলে টোল দিতে হবে ৮০০ টাকা, চার এক্সেল পর্যন্ত ট্রেইলারকে এক হাজার টাকা এবং চার এক্সেলের বেশি হলে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ টাকা করে বেশি টোল দিতে হবে।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)।