১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য এক্সরসিস্ট’কে স্রেফ ভৌতিক সিনেমার তকমা দিলে বড় ধরনের ভুল হবে। এটিই প্রথম হরর সিনেমা, যেটি সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড মনোনয়ন পায়। মুক্তির পর ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল ‘দ্য এক্সরসিস্ট’।
সিনেমা হলে বসে দর্শক মুহুর্মুহু চিৎকার করেছে রেগানের কার্যকলাপ দেখে। দুটি অস্কার জিতে হরর সিনেমার মর্যাদা অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল এই কালজয়ী সৃষ্টি। ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ মূলত উইলিয়াম পিটার ব্লেটি রচিত একটি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল। লেখক নিজেই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেছিলেন, সেরা চিত্রনাট্য বিভাগে অস্কার ট্রফিটি সে বছর তার ঘরেই যায়।
‘দ্য এক্সরসিস্ট’-এর সাফল্যে পরবর্তীতে এই সিরিজের বেশ কয়েকটি সিক্যুয়েল নির্মিত হয়, কিন্তু কোনোটিই প্রথম পর্বের সমতুল্য জনপ্রিয়তা পায়নি। এবার পর্দায় এসেছে ‘দ্য এক্সরসিস্ট: বিলিভার’। ১৯৭৩ সালে গোটা পৃথিবী ভয়ে শিউরে উঠেছিল ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ দেখে। সেই ছবিরই সরাসরি সিকুয়েল এই ছবি। এক্সরসিস্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির এটা ষষ্ঠ ছবি।
ছবির পরিচালক ডেভিড গর্ডন গ্রিন। এর আগে হ্যালোউইন সিরিজের তিনটি ছবি পরিচালনা করেছেন। গত ৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য এক্সরসিস্ট: বিলিভার’। বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য সুখবর হলো, শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেল বহুল আলোচিত এ সিনেমাটি।
সোজা বাংলায় এক্সরসিজম হলো ভূত তাড়ানো ওঝা। পৃথিবীর আদিকাল থেকে নানা প্রান্তের সভ্যতায় চালু রয়েছে এই আচার। সময় গড়িয়েছে, কিন্তু সভ্যতার যতই বয়স হয়ে যাক, এক্সরসিজম আজও টিকে রয়েছে। আর তাই এ নিয়ে ছবিরও বিরাম নেই। গত শতাব্দীর ছয়ের দশকে আচমকাই যেন বেড়ে গিয়েছিল শয়তানের উপাসকদের রমরমা! ঠান্ডা যুদ্ধের টেনশন, পারমাণবিক বোমার চোরা আতঙ্ক, যার প্রভাব পড়েছিল রুপালি পর্দাতেও।
১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রোজমেরি’স বেবি’ থেকে একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছিল। যা চরমে পৌঁছায় ১৯৭৩ সালে। সর্বকালের অন্যতম সেরা ভয়ের ছবি ‘দ্য এক্সরসিস্ট’ মুক্তি পায় সেই বছরই। প্রেতাবিষ্ট রেগানকে হরর সিনেমাপ্রেমীরা আজও ভোলেনি। এ বছরের ডিসেম্বরে ছবিটির পঞ্চাশ বছর পূর্তি। তার ঠিক আগেই মুক্তি পেল ‘দ্য এক্সরসিস্ট: বিলিভার’।
এই ছবিতে একটি নয়, দুটি কিশোরীর মধ্যে একই সঙ্গে অপশক্তির ভর হয়। আর তারপর শুরু হয় নানা অদ্ভুতুড়ে ঘটনা। অ্যাঞ্জেলা ও ক্যাথরিন নামের দুটি মেয়ে যেন ক্রমেই সম্পূর্ণ অন্য দুই অস্তিত্বে পরিণত হতে থাকে। ছবিতে দেখা মেলে ক্রিস ম্যাকনেলের। সেই প্রেতাবিষ্ট কিশোরী রেগানের মা। তিনি সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন অ্যাঞ্জেলা ও ক্যাথরিনকে। পরে এক দৃশ্যে রেগানেরও দেখা মেলে।
ছবির ট্রেলার থেকেই জানা গেছে, দিন তিনেকের জন্য নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল তারা। জানা যায়, শেষবার জঙ্গলের দিকে হেঁটে গিয়েছিল দুজনে। এরপর খালি পায়ে প্রায় ৩০ কিমি হেঁটে ফিরেও আসে। কোথায় গিয়েছিল তারা? তা সরাসরি বলা না হলেও উঠে আসে বাইবেলে বর্ণিত জিশুর তিন দিনের জন্য নরক গমনের আখ্যান। যা থেকে ইঙ্গিত মেলে নরক না হোক অন্তত নরকের দ্বারপ্রান্ত পর্যন্ত তারা নিশ্চয়ই পৌঁছে গিয়েছিল।
খ্রিস্টীয় বিশ্বাস অনুসারে, শয়তান সব সময়ই চেষ্টা করে চলেছে ঈশ্বরের হাত থেকে মানুষকে ছিনিয়ে নিতে। এই কিশোরীরাও সেই ষড়যন্ত্রেরই শিকার হয়ে পড়ে। তাদের শরীরে বাসা বাঁধে অপশক্তি। এরপর নানা ভয়ঙ্কর কান্ডকারখানার পর শুরু হয় এক্সরসিজম। কী হল তারপর? দুই কিশোরী কি রেহাই পেল অপশক্তির কবল থেকে? এসব জিজ্ঞাসার জবাব পেতে দেখতে হবে ছবিটি।