1. admin@crimenews24.net : cn24 :
  2. zpsakib@gmail.com : cnews24 :
শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ  নড়াইলে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ নারায়ণগঞ্জ নগর যুব কাউন্সিলের ৪র্থ মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সিলেটে আসছেন উপমহাদেশের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ মাওলানা ফজলুর রহমান  মৌলভীবাজারে ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত  গাইবান্ধায় প্রিপেইড মিটার নিয়ে নেসকোর একগুঁয়েমির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ মৌলভীবাজারে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উদযাপন মৌলভীবাজারে বিএনপি নেতা গাজী মারুফের জানাজা সম্পন্ন  গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারী নির্যাতন: ইউপি চেয়ারম্যান ঢাকায় গ্রেপ্তার ‎গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে কম্বল পেলেন ৩শ দুস্থ অসহায় মানুষ

মিথ্যা তথ্য ও ভূয়া জাল সনদ দিয়ে ২৪ বছর ধরে চাকরি, কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ

রাজশাহী প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১২০ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
রাজশাহীতে মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া সনদ দিয়ে ২৪ বছর ধরে পুলিশ কনস্টেবল থেকে বিভাগীয় কোটায় চাকরি করছেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঈদ আলী রেজা। মিথ্যা তথ্যে ২৪ বছর চাকুরীর কারণে সরকারের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও তছরুপের অভিযোগ উঠেছে যুব উন্নয়ননের এই কর্মকর্তা বিরুদ্ধে।
রাজশাহীর মহানগরীর বোয়ালিয়া ইউনিট থানায় কর্মরত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঈদ আলী রেজার ভূয়া বিভাগীয় কোটা ও শিক্ষা সনদের মিথ্যা তথ্য এবং দুদক ও বিভিন্ন দপ্তরে দায়েরকৃত অভিযোগের কপিসহ বেশকিছু ডকুমেন্ট হাতে এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই ও অনুসন্ধানে তার প্রমাণও মিলেছে।
নগরীর বোয়ালিয়া ইউনিট থানায় কর্মরত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঈদ আলী রেজা করতেন পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরী। মিথ্যা ও ভুয়া বিভাগীয় কোটা ও শিক্ষা সনদের তথ্য দিয়ে পুলিশ কনস্টেবল থেকে বাগিয়ে নেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা চাকুরি। শুরু থেকেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বার অভিযোগ দায়ের হলেও টাকা আর ক্ষমতাশীন দলের কেন্দ্রীয় উচ্চ পর্যায়ের এক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে বহাল তবিওতে দীর্ঘ দুই যুগ থেকে চাকুরী করছেন তিনি।
প্রাপ্ত বিভিন্ন নথি অনুসন্ধান করে জানা যায়- বর্তমানে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া ইউনিট থানায় কর্মরত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঈদ আলী রেজা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হুমায়ুন রেজা মিঞার ছেলে। রেজা ১৯৮৬ সালে  রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার চাঁদপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৯৮৯ সনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরীরত ছিলেন সঈদ আলী রেজা ।
অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালের ২৬ জুন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ‘যুব প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থান’  প্রকল্পের আওতার লোকবল নিয়োগের জন্য বেশ কিছু উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে নিয়োগে  বিজ্ঞপ্তি দেয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী , এই পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল- কোন বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অথবা বিভাগীয় প্রার্থীর ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রীধারী এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে কমপক্ষে ৩ বছরের বাস্তব চাকুরীর অভিজ্ঞতা।
কিন্তু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির উপরোক্ত শর্তাবলী সম্পন্ন না হওয়া সত্ত্বেও সঈদ আলী রেজা পুলিশ কনস্টেবল পদে থেকে মিথ্যা ও ভুয়া বিভাগীয় প্রার্থী এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে বাগিয়ে নেন চাকুরী। অথচ বিভাগীয় প্রার্থী না হওয়ায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী তাঁকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী হওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে উক্ত পদের জন্য আবেদন না করে চাকরিও পেয়ে যান তিনি। এখানে আরও উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে সঈদ আলী রেজা  তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর গানম্যান ছিলেন।
অনুসন্ধান সূত্রে আরও জানা যায়, সাঈদ আলী রেজা পুলিশ কনস্টেবল পদে সরকারি চাকুরিরত অবস্থাতেই বিভাগীয় কোন রকম অনুমোদন ছাড়া নিয়মিত ছাত্র সেজে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রহনপুর ইসলামীয়া কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এইচএসসি পাশ করেন। একইভাবে ১৯৯১ সালে বি. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। পরে ২০০৮ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি’ থেকে করেন এমএ পাশ। কিন্তু সরকারি বিধি অনুযায়ী- চাকরিরত অবস্থায় যথাযত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত নিয়মিত ছাত্র হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণও সম্পূর্ণ বেআইনী। এজন্য তাঁর অর্জিত সনদপত্র দুটি আইন অনুযায়ী বৈধ নয়।
সূত্রে জানা যায়, রেজা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিয়মবহির্ভুতভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য হয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রালয়ের অধীন বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে চাকুরি নেন। এই অনিয়মের কারণে তার চাকরি প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতের সময় স্থগিত করেন পিএসসি। সেই সময় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরকে পত্রও প্রদান করেছিল সংশ্লিষ্ট  দপ্তর। ওই সময় সারা বাংলাদেশের ২৪ জন থানা/উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার চাকুরী নিয়মিতকরণ ও স্থায়ীকরণ পিএসসি স্থগিত করে। সেখানেও সংশ্লিষ্ট ওই দপ্তরে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেন তিনি। পরে ওই দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে এবং তাঁর নিজ দপ্তরের কর্মকর্তাদের বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে চাকুরি প্রকল্প থেকে চাকুরি নিয়মিতকরণ ও স্থায়ীকরণ করে নেয়।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, রেজার চাকুরী স্থায়ীকরণের পর ২০১৩ সালের গ্রেডিয়েশানে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছে বিএ পাশ। আর ২০২১ সালের সর্বশেষ গ্রেডিয়েশানে আবারও উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন ১৯৯১ সালে স্মাতকোত্তর পাশ। যদিও তিনি ২০০৮ সালে এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি থেকে স্মাতকোত্তর পাস করেন।
২৪ বছরে বিভিন্ন কর্মস্থলে চাকুরিকালীন অধীনস্থ কর্মচারীদেরকে ভযভীতি প্রর্দশন ও নানা কৌশলে করেন কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ থাকলেও ভয়ে কোন কর্মচারি মুখ খুলতে সাহস পান না। তার দপ্তরের একাধিক কর্মচারি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বললে হামলা ও নানাভাবে হয়রানি শিকার হতে হয়। এছাড়াও উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে নানাভাবে ভুল বুঝিয়ে দূরে কোথাও বদলী করান।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা যায়, চাকুরীকালীন বিভিন্ন কর্মস্থলে, আসবাবপত্র, কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী ক্রয়, মোটরযান মেরামত, তেলের বিল, প্রশিক্ষণের সম্মানি ভাতা, প্রশিক্ষণ উপকরণ, ভ্রমন ব্যায়সহ বিভিন্ন খাতে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ২৪ বছরে করেছেন কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর ....
© All rights reserved © 2022 crimenews24.net
Design & Developed By : Anamul Rasel