কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন গুলতেকিন খান। দাম্পত্য জীবনের ত্রিশ বছর পর বিচ্ছেদ হয় এই জুটির। গুলতেকিনকে ডাকযোগে একটি হলুদ খামে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। প্রায় দুই দশক আগের সেই দিনের ঘটনা এক ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেছেন গুলতেকিন খান।
তিনি সোশ্যালে বিচ্ছেদ নোটিশের সেই খাম ও নোটিশটি পোস্ট করে লিখেছেন, এ ধরনের হলদে খামে চিঠি আসলে আমার মেয়ে শীলা বলত, এগুলো তোমাকে লেখা প্রেমপত্র। শীলার বাবার লেখা আত্মজীবনীমূলক বই পড়ে অনেকেই আমাকে চিঠি লিখত।
২০০৪ সালের ৬ জুন হলুদ খামে তালাকের নোটিশ আসার কথা উল্লেখ করে গুলতেকিন লেখেন, জুন মাসের ৬ (২০০৪ সালের) তারিখে স্কুল থেকে ফিরতেই শীলা বলল, “তোমার একটা প্রেমপত্র এসেছে।” আমি খামটি খুলতে খুলতে সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠছিলাম, ওপরে উঠে চিঠিতে চোখ রাখতেই বের হয়ে আসল একটি কাগজ।
এদিকে গুলতেকিনের পোস্ট করা নোটিশে দেখা যায় হুমায়ূন লিখেছিলেন, বিবাহের পর থেকেই তাহার সহিত আমার কোনোমতেই বনিবনা হইতেছে না। ভবিষ্যতেও বনিবনা হইবার কোনোরূপ সম্ভাবনা না থাকায় আমি অপারগ।
এ ছাড়া এ পোস্টের নিচে একটি মন্তব্যও করেন গুলতেকিন খান। সেখানে তিনি লেখেন, আমার সঙ্গে তার কোনোরকম বিরোধ নেই। আমি তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত একটিও নেগেটিভ কথা কারো কাছেই বলিনি। এটি আমার স্বভাবের সঙ্গে যায় না।
আবার অন্য একটি মন্তব্যে তিনি লেখেন, আপনারা অনুগ্রহ করে প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু লিখবেন না বা মন্তব্য করবেন না। তিনি আমার সন্তানদের বাবা। তারা (সন্তানরা) তাদের বাবাকে ভালোবাসে। দয়া করে তাদের আঘাত করবেন না।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয় কিশোরী গুলতেকিনের। এ সংসারে এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। গুলতেকিনের সঙ্গে বিচ্ছেদের দুই বছর পর ২০০৫ সালে অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন হুমায়ূন আহমেদ।
এদিকে গুলতেকিন ২০১৯ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কবি আফতাব আহমদকে বিয়ে করেন। গুলতেকিনের এ স্বামী গত বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মারা যান।