ঢাকার গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রাজবাড়ীর পরিবহন মালিকরা আবারও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। ফলে রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে কোনো বাস রাজবাড়ী থেকে ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। আগে থেকে পরিবহন বন্ধের খবর না জানায় যাত্রীরা কাউন্টারের এসে ফেরত যাচ্ছেন। রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের সিদ্ধান্তে এ ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জনিয়েছেন।
জানা গেছে, গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে রাজবাড়ীর পরিবহন মালিকরা ধর্মঘট পালন করছেন। একাধিক সূত্র জানায়, রাজবাড়ীর কোনো বাস পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যায় না। কিন্তু গোল্ডেন লাইন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা যায়। এ ছাড়া গোল্ডেন লাইন রাজবাড়ীর পরিবহন মালিকদের সঙ্গে আলোচনা না করে তারা নিজেদের মতো ট্রিপ পরিচালনা করছিল। এ জন্য তাদের বাধা দেওয়ায় তারা ঢাকার গাবতলীতে রাজবাড়ীর কাউন্টারগুলোতে ভাঙচুর চালায়।
পরে ঢাকার বাস-ট্রাক অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা করা হয়। এরপর সিদ্ধান্ত হয় গোল্ডেন লাইন রাজবাড়ীতে দুটি ট্রিপ চালাবে। কিন্তু তারা এই সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে একাধিক ট্রিপ চালাচ্ছিল। তাই শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের লোকজন বাস মালিক সমিতির সামনে থেকে গোল্ডেন লাইনের একটি বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে ঢাকায় ফেরত পাঠায়। এতেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর আগেও গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
বাস চলাচল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক লিটন বলেন, প্রশাসন দ্রুত এর সমাধান না করলে, ঢাকাসহ দক্ষিনাঞ্চলের খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া রুটের কোনো গাড়ি রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে যেতে দেওয়া হবে না।
অবশ্যই গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এর আগেও গোল্ডেন লাইন পরিবহনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। তারপর রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা ও ঢাকার বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা হয়। কিন্তু তারপরও গোল্ডেন লাইন তাদের ইচ্ছামতো ট্রিপ চালায়। এতে নিজেদের ক্ষতির কথা জানান রাজবাড়ী পরিবহন মালিক গ্রুপের লোকজন।
এদিকে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে অন্য উপায়ে ঢাকায় রওনা হচ্ছেন। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে মাহেন্দ্র, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এবং লোকাল অন্যান্য বাসে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত এসে নদী পার হয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন।
রিয়জুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, তিনদিন সরকারি ছুটি ছিল। আমি আরেকদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে পরিবার নিয়ে বাড়িতে এসেছিলাম। আমার সঙ্গে স্ত্রী ও ছোট ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। আজকে ঢাকা যাওয়ার জন্য কাউন্টারে আসলে শুনি বাস বন্ধ। এখন আমাকে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে ভেঙে ভেঙে যেতে হবে।