ভারত ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন বিভিন্ন স্থাপনার দেশ। যার মধ্যে মাত্র কয়েকটি স্থাপনা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের আওতাভুক্ত ছিলও। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন এবং কর্ণাটকের হইসালাস মন্দির এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে। ভারতে এখন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের সংখ্যা ৪২টি। এছাড়া আরও ৫০টি সাইট এই তালিকায় অপেক্ষমাণ রয়েছে।
কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন বুর্জাহোমের নিওলিথিক বসতি থেকে শুরু করে দিল্লির বাহাই মন্দিরের মতো স্থাপনা রয়েছে এই সম্ভাব্য তালিকায়। ১৯২১ সালে, শান্তিনিকেতন ‘পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং ‘বিশ্বভারতী’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত এই স্থানটি সম্প্রতি হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত হয়েছে। ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান অবশ্যই একটি অনন্য ল্যান্ডমার্ক হতে হবে যা ভৌগোলিক এবং ঐতিহাসিকভাবে এর সাংস্কৃতিক তাৎপর্য বহন করে। এই সাইটগুলি আন্তর্জাতিক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ প্রোগ্রাম দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি দ্বারা এগুলো পরিচালিত হয়।
অন্যতম প্রধান শহর দিল্লির রয়েছে হাজার বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক এই নগরে চারটি অঞ্চল রয়েছে। মেহরাউলি, নিজামুদ্দিন, শাহজাহানাবাদ এবং নয়াদিল্লি যেগুলি তাদের ঐতিহাসিকতা ধরে রেখেছে। দিল্লি ঐতিহাসিকভাবে একদিকে যমুনা নদী এবং অন্য দুই পাশে আরাবল্লী রেঞ্জ বরাবর একটি ত্রিভুজাকার প্যাটার্নে বিকশিত হয়েছে। তাছাড়া দিল্লি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট। সেসময় এই বিখ্যাত নগর ঐতিহাসিক সিল্ক রুটের সাথে মিশে গিয়েছিল।
মেহরাউলি, নিজামুদ্দিন, শাহজাহানাবাদ এবং নয়া দিল্লিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী শহরে মনোনীত করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই সীমানায় তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০০৪ সালে দিল্লির ঐতিহ্যবাহী ভবন, ঐতিহ্যবাহী এলাকা এবং প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত এলাকাগুলির সুরক্ষার জন্য একটি নতুন বিধান প্রদান করেছিল।
বর্তমানে রাজধানীর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলি হল লাল কেল্লা কমপ্লেক্স, হুমায়ুনের সমাধি, কুতুব মিনার এবং এর আশেপাশের কাঠামো। যদিও দিল্লিতে মাত্র তিনটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রয়েছে, তবে এটি অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা দ্বারা বিস্তৃত যা স্থানীয়দের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীদের জন্য পর্যটন আকর্ষণ। একটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের ট্যাগ প্রাচীন স্থাপনা সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে উল্লেখযোগ্য ভাবে অবদান রাখে। এছাড়া ভারতে আরো এমন অনেক প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে যেগুলা কোন স্বীকৃতি ছাড়াই পর্যটকদের কাছে বিখ্যাত।