নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে মাছ ধরার স্থান দখলকে কেন্দ্র করে দস্যুদের গুলিতে দুই জেলের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মানস বিশ্বাস দুই জেলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, বুধবার রাত ১২টার দিকে সন্দ্বীপ কোস্টগার্ডের সদস্যরা গুলিবিদ্ধ দুই জেলের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই সময় আহত দুই-তিনজন জেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নিহতরা হলেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের নাছির আহমদের ছেলে আব্দুর রহমান (৪০) ও একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ ইসমাইল (৪২)।
এর আগে, বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশে এ গুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দুজনসহ মোট আট জেলে আহত হন। আহতদের রাত ১১টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দস্যু কেফায়েত বাহিনী। তারা হলেন, রাজু (১৩), জুয়েল (২৬), আব্দুর রহমান (২২), হোসেন (৪০) ও ইসমাইল (৪০)।
হাতিয়া থানার ওসি জিসান আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে ঘটনাটি ঘটেছে হাতিয়ার মেঘনা নদীর পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশে।
গুলিবিদ্ধ জেলেরা হলেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের চরমজিদ গ্রামের ভুলু মাঝির ছেলে জিল্লুর রহমান (৩২) ও একই উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরতরাব আলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে নুর আলম মিয়া (৩৫)।
ভুক্তভোগী জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, সুবর্ণচর উপজেলার মাইন উদ্দিন মাঝি ও অলি মাঝি মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ অংশ থেকে দীর্ঘ দিন থেকে মাছ শিকার আসছেন। কিছু দিন আগে থেকে মেঘনা নদীর মাছ শিকারের এ স্থান দখলের চেষ্টা চালায় জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। এর জের বুধবার বিকেলের দিকে কেফায়েত বাহিনী ওই স্থান দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে দুটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সেখানে যান ভুক্তভোগী জেলেরা। একপর্যায়ে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনীর সদস্য আলতাফ, নুর উদ্দিন ও জুয়েল জেলেদের দুটি মাছ ধরার ট্রলারে দুই দফায় হামলা চালিয়ে মাছ, জাল, ট্রলারসহ কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যান। একপর্যায়ে জলদস্যু বাহিনী গুলি ছুড়লে দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হন। এসময় দস্যুদের হামলায় আরও তিনজন আহত হন। এছাড়া তারা আরও পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার কেফায়েত উল্যার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. মহিউদ্দিনের মুঠোফোনে কল করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ফোন রিসিভ করেন সন্দীপ কোস্টগার্ড স্টেশনের কন্টিনজেন্টের আরেক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তিনি তার পরিচয় দিয়ে বলেন, এসব অভিযোগের বিষয়ে তাদের জানা নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন এখনো অফিসে আসে নাই।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুময়ায়ন কবির বলেন, মেঘনা নদীতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।