নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৩ দিনের রেকর্ড পরিমাণ অবিরাম বর্ষণের ৫ দিন পরও শত শত পরিবার পানিবন্দি এবং হাজার হেক্টর ফসল নষ্টের উপক্রম। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় বাস করেও শুধুমাত্র পানি নিঃসরণে মানব সৃষ্ট কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা এবং পৌর মেয়রের দায়িত্বহীনতার ফলে জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। এতে রংপুর-দিনাজপুর সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের নতুন বাবুপাড়া ও কুন্দল এলাকার বাসিন্দারা সৈয়দপুর-দিনাজপুর সড়কের দহলা ব্রীজ এলাকায় ওই অবরোধ কর্মসূচী পালন করে। দহলা ব্রীজের নীচ দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা ও রেলওয়ের ভাগার (জলাধার) দখল করে বাধ দিয়ে পুকুর বানানোর ফলে নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে পড়ায় জনভোগান্তির প্রতিকার চেয়ে ২ ঘন্টা সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, পানিবন্দি পরিবারগুলোর সদস্যরা প্রথমে দহলা ব্রিজের উপরে মানববন্ধন ডাকলেও আশপাশের লোকজন ও পথচারী প্রতিবাদী মানুষ সামিল হওয়ায় পরবর্তীতে তা অবরোধে পরিনত হয়। এতে ২ ঘন্টা সড়কে অবস্থান করায় উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
এসময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. মহসীনুল হক, সৈয়দপুর পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল খালেক সাবু, ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মজিদ, মহিলা কাউন্সিলর আফরোজা বেগম, সাধারন কৃষক জোবেদ আলী, সিরাজুল ইসলাম, মো. আবু তালেব প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘শহরের কুন্দল এলাকায় স্বাভাবিক পানি বাঁধা প্রদান করছে একটি মহল। ফলে একটু বৃষ্টি হলে পানি বাড়িতে প্রবেশ করছে এবং ক্ষেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে। গত ৩ দিন অতিবৃষ্টিতে হাটু পানিতে ডুবে গেছে আমাদের এলাকা। এতে শিক্ষার্থী, রোগী ও মসজিদগামী মুসল্লীসহ জনসাধারণের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে।
তাঁরা বলেন, পানি আটকে থাকায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্টের উপক্রম হয়েছে। অন্যান্য এলাকার পানি নামলেও আমাদের এলাকায় এখনো পানি রয়েই গেছে। কোনমতে বের হচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষ কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান চান এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বলেন, ‘খাল বিল, ড্রেনের পানি যাতে স্বাভাবিক চলমান থাকে, কোথাও যেনো পানি আটকে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে সে জন্য পৌর পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কোন কোন মহলের দৌরাত্ম আর সাধারণ জনগণের অসহযোগিতার কারণে আমরা শতভাগ সফল হতে পারছিনা। তিনি এজন সকলের সহায়তা আশা করেন।
খবর পেয়ে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এই সমস্যা সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।