অবিশ্বাস্য হলেও সত্য পাউরুটিতে মিলছে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পটাসিয়াম ব্রোমেট সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ২২৮টি নামী-বেনামী পণ্যের ৪৭ শতাংশের মধ্যেই পাওয়া গেছে অনুমোদনহীন ও ক্ষতিকর এই রাসায়নিক। এমন বাস্তবতায় উপাদানটির ব্যবহার নিষিদ্ধে এবার কঠোর আইন প্রণয়নের কথা জানিয়েছে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই।
সহজলভ্য হওয়ায় নিয়মিত খাদ্য তালিকায় পাউরুটি রাখে মানুষ। চা-দোকান থেকে শুরু করে শিশুদের টিফিনব্যাগেও বাহারি রঙের মোড়কে পাউরুটির দেখা মেলে। অথচ নজরদারির অভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় এই খাবারের মাধ্যমে মানবদেহে ঢুকে পড়ছে বিভিন্ন ক্ষতিকর ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও রাসায়নিক উপাদান।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি- এনএফএসএল পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলছে, পাউরুটি, বনরুটির ৫৪টি নমুনাতেই মিলেছে পটাশিয়াম ব্রোমেটের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি। বেকারী পণ্যকে ফোলানো, নরম করাসহ বিভিন্ন আকৃতি দিতে মূলত উপাদানটি ব্যবহার করা হয়।
দশমিক ৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ব্রোমেট ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও গবেষণায় ওই মানমাত্রার কয়েকগুণ বেশি পাওয়া গেছে। মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত চিনি ও লবণের ব্যবহার। গবেষকরা বলছেন, পাউরুটির মতো নিত্য ভোগ্যপণ্যে এমন ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, ইমোনজিক্যাল ডিজঅর্ডার করে, ইউরোনিক্যাল ডিজঅর্ডার করে, নিউরোপ্যাথি করে, সবচেয়ে বেশি যেটা আশঙ্কা সেটা ক্যান্সার। মনিটরিংটা যদি কঠোর করা হয় তাহলে আশা করা যায়, মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকবে না।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন- বিএসটিআই বলছে, ২ বছর আগেই বিএসটিআই’র খাদ্য উপাদানের তালিকা থেকে পটাশিয়াম ব্রোমেটের ব্যবহার বাদ দেয়া হয়েছে।
বিএসটিআই উপ-পরিচালক (কৃষি ও খাদ্য) এনামুল হক বলেন, টেস্ট করে ওখানে পটাসিয়াম ব্রোমেটের কোনো অস্তিত্ব আমরা পাইনি। নতুন গেজেট অনুযায়ী নিয়মিতভাবে টেস্ট করা হবে।
মানবদেহের ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে ২০১৬ সালে পটাশিয়াম ব্রোমেটের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে ভারতের খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অন্তত আরও ২০ বছর আগে কানাডা, ব্রাজিল, চীনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ খাদ্যে উপাদানটির ব্যবহার নিষিদ্ধ করে।