সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর চার মাস ৭ দিন পর কবর থেকে মাহমুদুল হাসান বাবু (১৪) নামের এক কিশোর লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ।,
বুধবার (২ আগস্ট ) বেলা ১২টার দিকে চৌহালী থানার পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের উপস্থিতিতে লাশ তুলে তা ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জে এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহত মাহমুদুল হাসান বাবু উপজেলার দক্ষিণ খাষকাউলিয়া এলাকার ময়নুল হকের ছেলে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ দুপুরে বাসা থেকে বের হয়ে আনুমানিক বিকেল ৫টায় সময় নিহত মাহমুদ হাসান বাবুর বন্ধু মজিবর ও রাকিবের সাথে ঘুরতে গিয়ে মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার চৌদ্দখাদায় বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রীজের বিটের সঙ্গে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাথায় গুরুতর জখম হয়। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঢাকার হেলফ কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তবে মামলার বাদী ও নিহতের নানা মোঃ ইউছুব আলী মন্ডল জানান, গত ২৬ মার্চ বিকেলে সংবাদ পাই, আমার নাতী মাহমুদ হাসান বাবু বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা হেলফ কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে৷ প্রায় পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। পরে পোস্টমর্টেম ছাড়াই নাতীর দাফন করেন।
তিনি আরও জানান, প্রথমে তিনি ভাই-ভাতিজাদের কথা শুনে এটিকে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ভেবেই নাতীকে কবরস্থ করেন। পরে তাদের কথাবার্তায় ও মৃত্যুর আলামতে দেখে তার বুঝতে বাকি থাকে না যে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সম্পত্তি অবৈধভাবে গ্রাস, ভোগ দখল ও ওয়ারিশ শুন্য করার জন্যই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার একমাত্র নাতীকে হত্যা করা হয়েছে।
হত্যার সাথে জড়িত চার আসামী মজিবর (১৪), রাকিব (১৩) পিতা শামসুল হক, মোক্তার (৪০) পিতা আঃ হামেদ ওরফে সফর, মোঃ এরশাদ (৩০) পিতা ইউসুফ করাতী আরও অজ্ঞাত নামা ৩৫ জন ৷,
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইমদাদুল হক জানান, ময়নুল হকের ছেলে মাহমুদ হাসান বাবুর নানা আবু ইউছুফ মন্ডল পরে আদালতে নাতীর মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ৷ পরে গত ২ জুন তারিখে চৌহালী থানায় মামলা রেকর্ড করা হয় । পরে আদালত মামলাটি চৌহালী আমলী আদালতে রুজু করে কবর থেকে লাশ তোলার নির্দেশ দেন। তদন্তের স্বার্থে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেডিকেল অফিসারের উপস্থিতিতে লাশ তুলে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত্যুর সময় থানায় কোন কিছুই জানানো হয়নি। হঠাৎ নিহতের নানার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাড়ে ৪ মাস পর আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে নিহতের বাবার দাবি তার ছেলেেক পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে হয়েছে। পরিকল্পিত হত্যার বিচার দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানব বন্ধন করেন স্থানীয়রা