সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহবুবুল আজাদ তারেক সরকারের উপর মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরাম। বুধবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেলকুচি উপজেলা স্থানীয় সরকার জন প্রতিনিধি ফোরামের সাধারন সম্পাদক সোনিয়া সবুর আকন্দ।
বক্তব্যে তিনি বলেন, বেশ ক’বছর বেলকুচিতে ধরেই ঘুমোট পরিবেশ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতর পৌর এলাকার সুবর্ণসাড়া স্কুল মাঠে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দ্যেশে বেলকুচি পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র-২) মাহবুবুল আজাদ তারেক সরকারের উপর একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় বেলকুচি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন, আশংকাজনক অবস্থা দেখে ডাক্তারা তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের স্থানান্তর করেন। ইতিপূবেও এই সন্ত্রাসীরা একের পর এক বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৩ মে ২০২৩ইং তারিখে বেলকুচি থানার পাশেই প্রকাশ্যে দিবালোকে আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে বেলকুচি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জনাব শিপন আহমেদের উপর হত্যার উদ্দ্যেশে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। গত ১৪/০৫/২০২৩ইং তারিখে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব লুৎফর রহমান মাখন সাহেবের ছেলে সোহাগের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। উক্ত তারিখেই বেড়াখারুয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সৈনিক নজরুল ইসলামের ছেলে মাহিদুলকে হত্যার উদ্দ্যেশে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। গত ১৩ মে ২০২৩ ইং তারিখে সন্ধ্যার পর পৌর এলাকার বেলকুচি উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শ্রী গোপাল চন্দ্র প্রামানিক, চালা উত্তর যুবলীগ নেতা রিপন আহমেদসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর বাড়ীতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। গত ২৮/০৫/২০২৩ ইং তারিখ রোজ রবিবার বেলকুচি পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মনছুর আহমেদের বাড়ীতে গিয়ে হত্যার উদ্দ্যেশে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এই সন্ত্রাসীদের দ্বারাই বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি সন্ত্রাসী হামলার স্বীকার হয়েছেন। এই সকল ঘটনার ভিডিও ফুটেজও রয়েছে।
মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের প্রত্যেক্ষ এবং পরোক্ষ মদদে এবং বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেনের পক্ষপাতিত্বের কারণে এই সন্ত্রাসীরা একের পর এক নির্ভয়ে তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। উপজেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে জনপ্রতিনিধিরা বার বার বলেও এবং ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেনকে বললেও তিনি কর্ণপাত করেননি। বরং ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর স্বীকার করা হয় এবং বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখানো হয়। এক সময় এই ওসি আসলাম হোসেন মন্ডল গ্রুপে চাকুরী করতেন। এরই সুবাদে মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য
আলহাজ আব্দুল মমিন মন্ডলের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য তার সন্ত্রাসী বাহিনীদেরকে একতরফা সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আরও দৃঃক্ষজনক বিষয় হলো গতকাল আমাদের পৌর কাউন্সিলর যে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন সেই সন্ত্রাসীদের কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আহত কাউন্সিলরের বাড়ীতে পুলিশি অভিযান চালায়।
বেলকুচি উপজেলার স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধির ফোরামের পক্ষ থেকে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে এই ওসির জোর অপসারণের দাবী করছি এবং এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
আমরা স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি ফোরামের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উপর দিন দিন যে অমানুবিক নির্যাতন চালাচ্ছেন তা সরেজমিনের তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় বিনীত অনুরোধ করছি।,
অন্যথায় বেলকুচি উপজেলা স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরাম মানব বন্ধন, বিক্ষোভ ও কলম বিরতি দিতে বাধ্য হবে।,
সংবাদ সম্মেলনে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।,
এব্যাপারে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, কাউন্সিলরের উপর হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়েছি এখনো পুলিশ সেখানে মোতায়েন করে রেখেছি। তবে কাউন্সিলর বা তার পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দাখিল করেনি। অভিযোগ দাখিল করলে আমি সকল প্রকার ব্যবস্থা নেবো। আর তার বাড়ীতে তল্লাশীর বিষয়ে যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। আমি বা আমার কোন পুলিশ কাউন্সিলরের বাড়ীতে তল্লাশী চালায়নি। তবে অন্য কেউ করেছে কি না আমি জানিনা।