রাজশাহী জেলার বাগমারায় স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন স্থালে হাজির ম্যাজিস্ট্রেট। বিয়ে বাড়িতে ম্যাজিস্ট্রেটের আগমন ঘটায় বিয়ে দিতে পারেনি অভিভাবকগন। বাল্য বিয়ের আয়োজন করায় বর এবং কনের পরিবারকে গুনতে হয়েছে অর্থ। বাল্য বিবাহের আয়োজন করার দায়ে উভয় পরিবারের নিকট থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হলো ৫০ হাজার টাকা। ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা পরিশোধ করে চলে গেছে বর পক্ষ।
জানা গেছে, সোমবার উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের মোহনগঞ্জ গ্রামে পারিবারিক ভাবে কনের বাড়িতে আয়োজন করা হয় বিবাহের। সেই বিয়েতে বর সেজে হাজির হন দুর্গাপুর উপজেলার বহ্মপুর গ্রামের তবিবুর রহমানের ছেলে তাফিকুল ইসলাম (২৬)। বিয়ের সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে বরযাত্রী সহ মেয়ের বাড়িতে পৌঁছান তারা। দুপুরের নামাজ শেষে কাজির মাধ্যমে বিয়ের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটা শুরু হওয়ার কথা। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই উপজেলা প্রশাসনের নিকট খবর আসে অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কনের বাড়িতে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা যাওয়ার পর অভিযোগের সত্যতা মিলে। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী পুলিশ সহ কনে বাড়িতে হাজির হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রদী দেখে নিশ্চিত হওয়ার পর বিয়ে বন্ধ করে দেন। সেই সাথে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ মোতাবেক বরের ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় অনাদায়ে ১ মাসের কারাদন্ড। অন্যদিকে কনের পিতার ৩০ হাজার টাকা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চৌধুরী। রায় ষোষণার পর বর এবং কনের পরিবার থেকে জরিমানার সমুদয় অর্থ পরিশোধ করা হয়।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী বলেন, বাল্য বিবাহের আয়োজন করার দায়ে উভয় পক্ষকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সেই সাথে প্রাপ্ত বয়স হওয়ার আগে কোথাও বিয়ে দিবে না বলে উভয় পক্ষ অঙ্গিকার নামা প্রদান করেন। সেই কেউ যেন বাল্যবিবাহ দেয়ার চেষ্টা না করে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। বাল্য বিবাহের কোন অভিযোগ পেলে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।