ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে নাম মাত্র জমি নিয়ে সাইনবোর্ড সাটিয়ে প্লট বুকিং এর নামে গ্রাহকের সাথে প্রতারনারসহ অন্য জমি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে চাকচিক্যময় অফিস ও বিজ্ঞাপন যোগে সর্বশ্রান্ত করার আয়োজন সম্পন্ন করা হলেও এ সংক্রান্তে দায়িত্বশীল দপ্তর গুলোকে কোন তদারকি করতে দেখা যায়নি। জয়েন্ট স্টক ঢাকা হতে নামের ছাড়পত্র নিয়ে ঐতিহ্যবাহী আড়িয়াল বিল অধ্যূষিত ষোলঘর ইউনিয়নের ষোলঘর মৌজায় কথিত ব্যবসা পরিচালনা করছেন পুষ্পধারা প্রোপাট্রিজ নামে একটি কথিত আবাসন প্রতিষ্ঠান। আবাসন বা রিয়েল এস্ট্রেট ব্যবসার কোন প্রকার অনুমোদন পত্র ছাড়াই চলছে প্লট বানিজ্য । পুষ্পধারা প্রোপাট্রিজের মালিকানাধীন ৩শত বিঘা জমি আছে বলে জয়েন্ট স্টক হতে ইনকর্পোরেশন সার্টিফিকেট নিয়েই গ্রাহক প্রতারনায় নেমে পড়েন। যার অনুমোদন পত্র নং- সি-১১৫৫৪২/১৪ এর বাহিরে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের অনুমতি,পরিবেশ অধিদপ্তর,ফায়ার সার্ভিসসহ কোন দপ্তরের কোন রুপ অনুমতি ব্যতিরেকে কথিত কোম্পানির মূল হোতা আলী নুর চক্রের অন্যদের ডিক্টেটরশিপের ভিত্তিতে কথিত আবাসন ব্যবসা শুরু করেন।ডিক্টেটরশিপের অপর অংশীদার শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর এলাকার ইয়াসমিন দেলোয়ার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্ণধার মোঃ দেলোয়ার হোসেন।ষোলঘর এলাকা ছাড়া দেশের অন্য কোথাও তাদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কথিত ব্যবসার পরিধি- পরিচিতি বাড়াতে বিভিন্ন মাধ্যমে মন ভোলানো বিজ্ঞাপন প্রচার করেন। প্রতিদিন পুষ্পধারা আবাসিক প্রকল্প এলাকা ষোলঘরের কেয়টখালী ও উমপাড়াতে অসংখ্য কথিত গণমাধ্যমের গাড়ি দেখা যায়। গাড়ি যোগে বিভিন্ন ব্যাক্তিদের এনে তাদের প্রকল্প পরিদর্শনে সহযোগিতা করেন। এতে করে ঢাকাসহ স্থানীয় অনেক ক্রেতা প্লট ক্রয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেন। বিশেষ করে প্রবাসীরা এ চক্রের বড় টার্গেট। অনেক ব্যাক্তি প্রবাসে বসে অনলাইনে সংযোগ করে প্লট ক্রয়ের স্বপ্ন দেখছেন। ছাড়পত্র গ্রহনকালীন জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিকট পুষ্পধারা আবাসন প্রকল্পের নিজস্ব ৩শত বিঘা জমির মালিকানা দাবি করলেও সরেজমিন কথিত কোম্পানিটির মাত্র ৪ বিঘা সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। বাকি ২শত ৮৬ বিঘা সম্পত্তি কাগজ-কলম ও তাদের নাটকীয় ডেল্টা প্লানে সীমাবদ্ধ। ষোলঘর ইউনিয়নের কেয়টখালী মৌজায় এসএ খতিয়ান নং-১৭৯৭ আর এস খতিয়ান ন-৭৮৬ দাগ নং-৫২৯/৮২ যেখানে নাল জমির পরিমান ১৮ ও ১শত ১৪ শতক। ৩ কাঠা আকাড়ে প্লট বিন্যস্ত করলে সর্ব্বোচ্য ১৫/২০ জনকে বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব। অথচ ইতোমধ্যে ১৬ শতাধিক গ্রাহক হতে প্লট বরাদ্দের বুকিং মানি গ্রহন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় কিছু কৃষক হতে নাম মাত্র ভাড়া নিয়ে কোথাও বা জোর করে সাইনবোর্ড স্থাপনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। পুষ্পধারার জন্য নাম মাত্র মূল্যে জমি ক্রয়ের লক্ষে শ্রীনগর সাব-রেজিস্টারকে কমিশনে ঢাকায় নেওয়া হয় সেখানে ভূয়া কাগজ পত্র চিহ্নিত হওয়ায় দলিল রেজিস্ট্রি সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লিখক মোঃ আলমগীর হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি আগামীকাল ১২টার পর আমার অফিসে আসেন কথা হবে। আর যদি আপনি না আসেন আমিই আপনার অফিসে আসবো। এখানে দলিল দাতা গ্রহিতারা ভূয়া নয় তারা সঠিক আছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুন্সীরহাটি এলাকার মৃত গেন্দু শেখের ছেলে সাহাবুদ্দিন অভিযোগ করে জানান, গত ২৬শে অক্টোম্বর/২২ সালে শ্রীনগর সাব-রেজিস্টি অফিস থেকে আমমোক্তারনামা দলিল নং-৯৬৪২/২২ মুলে ষোলঘর মৌজার আমার ১ একর ৪৩শতাংশ নাল জমি কেয়টখালী এলাকার আজাদকে সনাক্তকারী দেখিয়ে পুষ্পধারা মালিক আলী নুর তার নিজ নামে লিখে নেন। আমি জানতে পেরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ইতোপূর্বে পুষ্পধারা ও অন্যান্য কথিত কোম্পানির মধ্যে কয়েক দফায় বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানোর মত ঘটনার জন্ম হয়।পুষ্পধারা অফিসের পাশে আর এস দাগ নং-১০৪১ মোট জমির পরিমান ৩৬ শতক।জমিটির মালিক ৫ ভাই ও তিন বোন। ৫ ভাই হতে ইতোমধ্যে মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে জাকির হোসেন ও মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মিজান বায়না মূলে ক্রয় করেন। জমিতে সাইনবোর্ড স্থাপন করার পর হতে আক্রমণাত্বক হয়ে উঠে পুষ্পধারায় রক্ষিত লাঠিয়াল বাহিনী। অন্য দিকে পুষ্পধারার দাবি তারা জমিটির বায়না করেছেন তাই জমির মালিকানা তাদের। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে বায়না নামা মালিক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করেছি,সাইনবোর্ড স্থাপন করেছি। তাদের অফিসের পাশে আমার জমি হওয়ায় উক্ত জমি ছেড়ে দিতে বিভিন্ন ভাবে আমাদের হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে।
পুষ্পধারা আবাসন কোম্পানির চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন ব্যস্ত আছি আপনার সাথে এ ব্যাপারে পরে কথা বলবো।
শ্রীনগর সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এখন পর্যন্ত এই সব হাউজিং প্রকল্প গুলোর কোন পেপারস আমাদের হাতে নেই এবং তাদের কোম্পানীর নামে আমাদের এখান থেকে কোন নামজারি তারা পায়নি। ভুক্তভোগীদের কেউ আমাদের কাছ লিখিত অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ জাতীয় আরো খবর ....