নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার ও তার বড় ভাই পুলিশ কর্মকর্তা অলি উল্লাহ’র সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট ইউপির কলুংকা গ্রামের শতাধিক মানুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পরে তাদের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ইনচার্জ (ওসি) ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের দৌলতপুর হাসপাতাল রোডে শৌখিন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে কলুংকা গ্রামের নারী-পুরুষসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। পরে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানায়, চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার ও তার বড় ভাই রাজধানীতে সিআইডি পুলিশে কর্মরত এসআই অলি উল্লাহ সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে তার বাহিনীকে ব্যবহার করছে। তাদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। গ্রামের মহিলারা সংসারের বাজার করে। পুরুষেরা বাইরে গেলে তাদের মারধর করে প্রায়ই আহত করছে সোহাগ ও অলি উল্লাহর বাহিনী।
তারা আরও জানায়, গ্রাম থেকে শহরে যাবার একমাত্র পথ সামাইকোনা মোড়। সেখানে চেম্বার স্থাপন করেছে সোহাগ চেয়ারম্যান। তাদের বাহিনীর লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চেম্বারে অবস্থান করে। প্রতিপক্ষের লোকজন শহরে যাওয়ার পথে সামাইকোনা পয়েন্টে তাদের ওপর হামলা চালায়।
সম্প্রতি গ্রামের জাহাঙ্গীর ও মামুন নামে দুজনকে সামাইকোনা মোড়ে হামলা চালিয়ে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ও তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দুটি ভেঙে পুড়িয়ে পানিতে ফেলে দেয়। এই অবস্থার থেকে মুক্তি চান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই অলি উল্লাহর বক্তব্য জানতে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার সঙ্গে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী রায়হান সিদ্দিকী ফারুকের নেতৃত্বে এসব মানববন্ধন হচ্ছে। কয়েকদিন আগে তার লোকজনই হামলা চালিয়ে আমার ৬ জনকে গুরুতর আহত করেছে। থানা পুলিশ সব জানে। সম্প্রতি আমার বাইক চালককে ভাড়াটিয়া কিলার দিয়ে জখম করেছে। সেই যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর কার নির্দেশে হামলা করেছে সেটা জবানবন্দি দিয়েছে। নির্দেশদাতার নামটা পুলিশের কাছ থেকে জেনে নিন। তাহলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমি চাই ঘটনা যথাযথ তদন্ত করে যেই দোষী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি দোষী হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি উভয়পক্ষে পাল্টাপাল্টি কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সবগুলোত ঘটনাতেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজকের অভিযোগের প্রেক্ষিতেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । তবে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।