রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারকে দল থেকে বহিস্কারের জন্য হাই কমান্ডে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নানা অপকর্ম ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগ তুলে গত ২৭ মার্চ মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাঁচ পাতার চিঠিটি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাপতির দপ্তরে পাঠানো হয়। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষর করে চিঠিটি গ্রহন করেন।
একই সঙ্গে চিঠির অনুলিপি কমিটি দেয়া হয়েছে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ ও সাংগঠনিক সম্পদক এসএম কামালকে।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী মোজাফ্ফর হোসেন। চিঠিটি বিবেচনায় নেয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিএমডিএর চেয়ারম্যান সাবেক এমপি বেগম আখতার জাহান।
চিঠিতে ডাবলু সরকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাজাকার আব্দুস সাত্তার টিপুর প্রধান সহযোগী মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাজাকার আব্দুর রশিদ সরকারের পুত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের একটি যৌন আবেদনময়ী নগ্ন ভিডিও গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে রাজশাহীসহ আশপাশের জেলা এবং স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি মূখ্য আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। ডাবলু সরকারের এহেন নৈতিক স্খলনজনিত কর্মকান্ডের প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন তাকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সকল কর্মকান্ড থেকে বহিস্কারের দাবি জানায়।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে ডাবলু সরকারের এহেন কর্মকান্ডে দলের ভাবমুর্তি ধ্বংস করছে। যা আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ইতিমধ্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোস ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ডাবলু সরকারের অশ্লীল ভিডিও ভাইরালের পর থেকে তাকে দল থেকে বহিস্কারের দাবি উঠে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ ডাবলু সরকারকে দল থেকে বহিস্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলেন আয়োজন করা হয়েছিল। এ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে নগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের কয়েকশ’ নেতাকর্মী অংশ নেন। এর আগে তিন দফায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে তাকে বহিস্কারের দাবি জানায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ডাবলু সরকারের একটি অশ্লীল ভিডিও নেট দুনিয়ার জড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন লোকজনের কাছে হোয়াটসঅ্যাপেও পাঠানো হয় ভিডিওটি। এ ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডাবলু সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে তিনি দাবি করেন, একটি অনলাইন পোর্টালের ফেসবুক পেজে কে বা কারা তাঁকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে এডিটিংয়ের মাধ্যমে মিথ্যা, অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে ডাবলু সরকারের সম্মানহানি করার চেষ্টা করছে।