অনেকটা স্রোহা মিলের মত দেখতে সারি সারি মেশিন থেকে বেরিয়ে আসছে আঁশ। আর এই আঁশ বের হচ্ছে পরিত্যক্ত কলাগাছ থেকে।গাছের উৎকৃষ্ট অংশ দিয়ে তৈরী হচ্ছে জৈব সার।
নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের বড়েন্দার গ্রাম।এই গ্রামের কাকড়ার বিল নামক নির্জন মাঠে গড়ে উঠেছে একটি আধা পাঁকা ভবন। ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় বাঁশের আড়ে লম্বা করে রোদে শুকানো হচ্ছে কলা কাছের বাকল।
কলা গাছ থেকে কলা সংগ্রহের পর ফেলে দেওয়া হয় গাছটি। কোন প্রয়োজন ছাড়াই মাঠেই পচে যায় এই গাছ গুলো। কিন্ত সেই গাছ গুলোর খোলা বের করে বিদ্যুৎ চালিত মেশিনে দিয়ে বের করা হচ্ছে আঁশ।আঁশ গুলো রোদে শুকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ভারত সহ বিভিন্ন দেশে। আর এই আঁশ থেকে তৈরী হচ্ছে পোশাকশিল্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন হস্তশিল্পের নানা পণ্য।
কলা গাছ থেকে সুতা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করা নারী উত্যক্তা গোলসানাআরা পারভীন জানান, একটি কলা গাছের বাকল থেকে কমপক্ষে ২শ’ গ্রাম সুতা উৎপাদন করা সম্ভব স্থানীয়ভাবে প্রতিটি কলাগাছ ১৫ টাকা দরে কেনা হয়। পরিবহন খরচ বেশি হলে কলা গাছ কিনতে গেলে খরচও বাড়ে। ৫টি কলা গাছের বাকল থেকে ১ কেজি সুতা পাওয়া যায়।
এছাড়া কলার বাকল থেকে ফাইবার সংরক্ষণের পর বাকি অংশ থেকে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করা যায়। প্রতি কেজি কম্পোস্ট সার ২০ টাকায় বিক্রি হয়। এখানে ৫০ জন নারী শ্রমিক রয়েছে তারা সকাল ৮ টায় এসে বিকাল ৫ টা পর্ষন্ত কাজ করেন। ফলে এই কারখানায় কমপক্ষে ৫০ জন নারী কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে।
বীরগ্রামের নারী শ্রমিক জয়িতা বিশ্বাস বলেন, আমি এক জন বিধবা। স্বামী মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্টে সংসার চলছলি এখন এই কারখানায় কাজ করে ছায়ার ভিতর থেকে টাকা আয় করতে পারছি। আমার মেয়েটিকে পড়াশোনা করাচ্ছি। সব মিলে খুবই ভাল আছি আমি।
সুর্বনা বিশ্বাস বলেন, আগে আমি মাঠে কাজ করতাম।এখন এই কারখানায় কাজ করি। আমি সহ ৫০ জনের অধিক নারী শ্রমিক এখানে এক সাথে কাজ করি। নির্জন এই জায়গাতে কম কষ্টে ভাল বেতনে কাজের সুযোগ হয়েছে আমাদের।