মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গত দুই দিন যাবত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার সকালে তাপমাত্রা ছিলো ৯ ডিক্রী সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগের দিন মঙ্গলবারও সকাল ৯টায় এখানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ দশমিক ৫ ডিক্রী সেলসিয়াস।
জেলাজুড়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গ্রাম ও শহরে শীতার্ত মানুষদের দিন ও রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের দৃশ্য চোখে পড়ছে। প্রতিদিনই বিকাল হলে শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। পরদিন দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকছে। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি ছিন্নমূল ও দিনমজুররা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রচণ্ড শীতে কাবু চা বাগান ও হাওর তীরের মানুষসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।
গেল ক’দিন থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে জেলার চা শ্রমিক ও হাওরের বোরো চাষিরা মাঠে কাজ করছেন। প্রচণ্ড ঠান্ডা চলমান থাকায় ভরা মৌসুমে বোরো চাষের শ্রমিক সংকট চলমান রয়েছে।
জেলাজুড়ে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে। ঠান্ডা বেড়ে চলায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষজন। শীতের প্রভাবে কাজ কর্ম অনেকটা কমে যাওয়ায় আয় রোজগার নিয়ে তাদের চরম দুশ্চিন্তা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাওর তীরের বোরো চাষিরা। তীব্র শীতের মধ্যেও তারা ধানের চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকছেন। জেলাজুড়ে দেখা দিচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগবালাই। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কেবল বাড়ছেই। ঠান্ডাজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। প্রতিটি হাটবাজারে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের।
সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক দিনেন্দ্র ভৈৗমিক জানান, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালসহ শীতজনিত রোগে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের নিয়মিত ভর্তি অব্যাহত রয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিক্রী সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ছিল ৮ দশমিক ৫ ও সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিক্রী সেলসিয়াস। জেলার ওপর দিয়ে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
তিনি জানান, আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা এ ধরনের থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিক্রী সেলসিয়াস।