তাবলীগ জামাতের ৫দিন ব্যাপী জোড়কে কেন্দ্র করে কেরানীগঞ্জে দেশের বৃহত্তম জুম্মার নামাজ ২রা ডিসেম্বর শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার জুম্মার নামাজে ঢাকার আশপাশের কয়েক লক্ষ মুসল্লী বামনশূল ঢাকা জেলার ইজতেমার (কিংস্টার হাউজিং) ময়দানে আসতে থাকেন। তাবলীগের মূলধারা (মাওলানা সাদ কান্ধলভী দাঃবাঃ এর অনুসারী) তিনচিল্লার সাথী ও ১চিল্লার উলামায়ে কেরামের জোড় হলেও, জুম্মার নামাজকে কেন্দ্র করে জোড়ের ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ময়দানে জায়গা না পেয়ে আশেপাশের সড়কেও আগত মুসুল্লিরা দাড়িয়ে জুমার নামাজের শরিক হয়। প্রত্যেক নামাজের পরে ময়দানে উর্দু ভাষায় বয়ান হয় ও বাংলায় তরজমা করা হয়। বয়ানে মুরুব্বিরা বলেন, মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা একমাত্র দ্বীন ইসলামের মধ্যেই আল্লাহ রাখছেন। মানুষ আজ দ্বীন না বুঝার কারনে দুনিয়ার অল্প সময়ের জীবনকে উদ্দেশ্য বানিয়ে আখিরাতকে নষ্ট করছেন।
তাই মানুষকে জীবনের আসল উদ্দেশ্য বুঝানোর জন্য আমাদের আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে প্রত্যেক ব্যক্তিকে ইহা বুঝাতে হবে।
গতকাল জুম্মার নামাজের ইমামতি করেন, তাবলীগ জামাতের বর্ষিয়াণ মুরুব্বি ও কাকরাইল মসজিদের আহলে শূরা মাওলানা মোশাররফ হোসেন, বাদ জুম্মা বয়ান করেন, দিল্লীর নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরুব্বি মাওলানা মাহমুদ সাহেব(দিল্লী) ।
গত ২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার থেকে শূরু হওয়া এই জোড় ৩ নভেম্বর শনিবার দুপুর ১২ ঘটিকায় ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা আঃ সাত্তার সাহেবের পরিচালনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি হবে ইনশাআল্লাহ । দুআর আগে হেদায়তি কথা বলবেন, নিজামুদ্দিন মারকাজের প্রবীণ মুরুব্বি মাওলানা জমশেদ হোসেন।
কাকরাইল মসজিদের মূলধারার শুরা হযরত সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম সাহেব বলেন, গত ৫৬ বছর ধরে টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমার স্বাগতিক দেশ ও প্রস্তুতি হিসাবে এই জোড় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। টঙ্গীর ময়দানে গত দুই বছর বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই ইজতেমার ময়দানে প্রচুর সংস্কার কাজ বাকি থাকায় সরকারের পরামর্শে কেরানীগঞ্জে এই জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তাবলীগের মাঠের জামাতের সাথী মো: সায়েম জানান, দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের তাবলীগের মুরব্বিদের তত্বাবধানে ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। এই পাঁচ দিনের জোড়ে ২৫টি দেশের প্রায় ৭৫০ জন বিদেশি মেহমান উপস্থিত হয়েছেন। বিদেশি মেহমানরা বিশ্ব ইজতেমা পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় দাওয়াতি কাজ করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ ২ লাখের মতো ৩ চিল্লার সাথী আছেন। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ এই জোড়ে প্রায় লক্ষাধিক ৩ চিল্লার সাথী উপস্থিত হয়েছেন। তাদের বড় একটি অংশ আগামি বিশ্ব ইজতেমার দাওয়াতের জন্য দেশের নানানপ্রান্তে দাওয়াতের কাজে বের হয়েছেন।
এই বিষয়ে বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন সৈয়দ আনেয়ার আবদুল্লাহ বলেন, এই জোড়ে তাবলীগের পুরো বছরের সারাদেশের কাজের রিপোর্ট পেশ করা হয়। আবার আগামী এক বছরের কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
জোড় থেকে দেশি-বিদেশি জামাত বিশ্ব ইজতেমার দাওয়াতের জন্য পাঠানো হয়। বিশ্ব ইজতেমার মতোই এ জোড়েও তাবলীগ জামাতের মূলধারা কেন্দ্রীয় বিশ্ব মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরুব্বিগণ গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন।