নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর এসি (অম্বিকা চরণ) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরম্নদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ,অনিয়ম-দূর্নীতি,দূরব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ এবং উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা তামান্না খানমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ বিক্ষোভ মিছিল করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১২ অক্টোবর) সকালে লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর এসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম-দূর্নীতি, দূরব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রতিবাদ এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষক তামান্না খানমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে দফায় দফায় এড়েন্দা বাজারসহ আশপাশের এলাকায় বিচারের দাবীতে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ মিছিল করে।
খবর পেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কাশিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান বিদ্যালয়ে গিয়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ ভূইয়া বিদ্যালয়ে ছুটে যান। এ সময় তারা বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং সৃষ্ট ঘটনার বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষর্থী লামিয়া খানম,তৌফিক ইমাম,মুনতাহিমা, তাসকিয়া খানম, সপ্তম শেনীর শিক্ষার্থী ইমন, প্রসেনজিৎ বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম -দূর্নীতির কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে মঙ্গলবার সহকারী প্রধান শিক্ষক তামান্না খানমকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় আমাদেরকে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা সহকারী প্রধান শিক্ষক তামান্নার পুর্ণঃবহাল ও প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
সহকারী প্রধান শিক্ষক তামান্না খানমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আইন না মানা,শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা, হিন্দু-মুসলিম শিক্ষকদের বিভাজন তৈরি করে তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করা সহ বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়,ইতিমধ্যে যার কারন দর্শানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট আমি এর সঠিক বিচার চাই। বুধবার সকালে সরোজমিনে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে শিক্ষক তামান্না খানমের বিষয়ে আনিত অভিযোগ এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সহকারী প্রধান শিক্ষক তামান্না খানমকে প্রথমে কারন দর্শানো চিঠি দেওয়া হয়। এর জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর আলী বলেন,ঘটনাস্থলে পৌছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ পেলে,তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।