ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে উৎযাপিত হবে বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও দানোত্তম কঠিন চীবর দান। বাঁশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে ৯ অক্টোবর (রোববার) আকাশে উড়বে আকাশ প্রদীপ। এ উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে উপজেলার বৌদ্ধবিহার গুলোতে। সকাল থেকে প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে সম্পন্ন হয়েছে ধর্মসভা। দুপুর থেকে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ফানুস উড্ডীয়ন করে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযান সম্পন্ন হবে। বিকাল ৫ টা নাগাদ শান্তির বার্তা নিয়ে আকাশে উড়বে আকাশ প্রদীপ।
জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মধ্যে ৩ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভাসহ ৯ টি বৌদ্ধ মন্দিরে একই সাথে যথাক্রমে বাঁশখালী পৌরসভাস্থ জলদী ধর্মরত্ন বিহার, বাঁশখালী শীলকুপ জ্ঞানোদয় বিহার, বাঁশখালী দক্ষিণ জলদী বিবেকারাম বিহার, বাঁশখালী কেন্দ্রীয় শীলকুপ চৈত্য বিহার, বাঁশখালী কাহারঘোনা মিনজীরিতলা সংঘরাজ অভয়তিষ্য পারিজাত আরাম বিহার, বাঁশখালী পুইছড়ি চন্দ্রজ্যোতি বিহার, বাঁশখালী জলদী প্রজ্ঞাদর্শন মেড়িটেশন সেন্টার ও বিহার, বাঁশখালী জলদী কেন্দ্রীয় ধর্মচক্র প্রগতি বিহার, বাঁশখালী জলদী সার্বজনীন বোধিচৈত্য বিহারে আকাশ প্রদীপ উড়বে।
শীলকূপ জ্ঞানোদয় বিহারের অধ্যক্ষ রাহুল প্রিয় মহাস্থবির বিহার জানান, ‘আজ থেকে বৌদ্ধ বিহারগুলােতে পুণ্যার্থীরা পুজা দেওয়ার উদ্দ্যেশ্য সমবেত হবে। দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণ কামনা করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করবে। এছাড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ভিক্ষু সংঘকে ভক্তরা করবেন পিন্ড দান। এসময় বৌদ্ধ উপাসক উপাসিকরা পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ করবে। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে আজ সকালে ধর্মীয় আলােচনা সভা সম্পন্ন হয়েছে। সন্ধ্যায় প্রবারনা পূর্ণিমার মূল উৎসব আকাশপ্রদীপ উত্তোলন করা হবে। এছাড়াও সন্ধ্যায় প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে প্রজ্জলিত হবে অসংখ্য মাঙ্গলিক প্রদীপ।’
বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতি সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক কল্যাণ বড়ুয়া জানান, ‘সম্প্রীতির অন্যান্য দৃষ্টান্ত রেখে বাঁশখালীর প্রতিটি বৌদ্ধ বিহার গুলোতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় প্ররাবণা পূর্ণিমা উৎযাপন ও আকাশ প্রদীপ ফানুস উত্তোলন করা হবে। বাঁশখালীর ৯টি বৌদ্ধ বিহারে সন্ধ্যা থেকে ব্যাপক আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ফানুস উত্তোলন করবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। এরই ধারবাহিকতায় বর্নিল ফানুসে ঢেকে যাবে বাঁশখালীর আকাশ, সুন্দর মনোরম এই দৃশ্য দেখতে উপজেলার প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে জড়ো হতে থাকবে হাজার হাজার বিভিন্ন ধর্মের মানুষ।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানান, ‘সম্প্রীতির অন্যান্য দৃষ্টান্ত রেখে বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান উৎসব সুন্দরভাবে উদযানে উপজেলা প্রশাসন সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। এ উপজেলার সকল ধর্মপ্রাণ মানুষের সহাবস্থান ও স্প্রীতির বন্ধন সবসময় মুগ্ধকর।’
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন জানান, ‘উপজেলায় ৯টি বৌদ্ধ বিহারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফোর্স ও তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। আশা করছি ব্যাপক নিরাপত্তায় উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের এই ধর্মীয় উৎসব পালিত হবে।’