রাজশাহীতে দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় চিকিৎসা শেষে একজন হাসপাতাল ছেড়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে এটিএন নিউজের রাজশাহী জেলার ক্যামেরাপারসন রুবেল ইসলাম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
এদিকে, মামলা করার তিন দিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক দাবি করেছেন, তাঁদের মীমাংসা করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁরা মীমাংসা করবেন না।
রুবেল ইসলাম বলেন, তিনি চার দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাসপাতাল ছেড়েছেন। তাঁর এখনো ডান কানে ও গলায় ব্যথা আছে। শরীরের ব্যথা কমে গেছে।
চিকিৎসক বলেছেন, অন্তত দুই সপ্তাহ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে থাকতে হবে। ডান কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর। হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, হামলার শিকার হয়ে তিনি চার দিন হাসপাতালে ছিলেন। অথচ যাঁরা দলবদ্ধভাবে হামলা চালালেন, তাঁদের ব্যাপারে প্রশাসন কিছুই করতে পারল না।
গত সোমবার সকাল সোয়া আটটার দিকে রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) কার্যালয় থেকে টেলিভিশন লাইভ চলাকালে এটিএন নিউজের রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপারসন রুবেল ইসলামের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে দুজন আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। পরে সেদিন চিকিৎসা নিয়ে বুলবুল হাবিব হাসপাতাল ছাড়েন।
হামলার প্রতিবাদে গত সোমবার বিএমডিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সাংবাদিকেরা। পরে বিএমডিএর চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান এসে সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা ভান্ডাররক্ষক মো. জীবন ও গাড়িচালক আবদুস সবুরকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরপর রাতে সাংবাদিক বুলবুল হাবিব মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুর রশীদ, বিএমডিএর ভান্ডাররক্ষক মো. জীবন, অফিস সহকারী মো. সেলিম, প্রধান নির্বাহীর ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল ইসলাম, আনসার সদস্য মো. এনামুল, বিএমডিএর অফিস সহকারী ফারুক ও গাড়িচালক আবদুস সবুর। এতে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮-১০ জনকে অভিযুক্ত করে আসামি করা হয়েছে।
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা হলে রোববার তাঁরা বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন তাঁদের একমাত্র দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
নগরের রাজপাড়া থানার পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজল কুমার নন্দী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের আগে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে অবগত করতে হয়। তাঁরা গতকাল বুধবার বিএমডিএর চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চেয়েছেন। এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠান থেকে সেদিনের হামলার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে।