চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পুলিশের তাড়া খেয়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে ডুবে নিখোঁজ, ২৬ ঘন্টা পরে টোকনের লাশ উদ্ধার দাফন সম্পন্ন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে আলমডাঙ্গা আঠারোখাদা থেকে এই লাশ উদ্ধার করেছে। আলমডাঙ্গা ভাংবাড়িয়া কারিগর পাড়া মাথাভাঙ্গা নদীতে পুলিশের তাড়া খেয়ে ডুবে যাওয়া টোকনের লাশ পাঁচ কিলোমিটার দূরে আঠারোখাদা ব্রিজের নিকট থেকে ২৬ ঘণ্টা পরে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি টিম।
জানা গেছে,চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে ভাংবাড়িয়া কারিগর পাড়ায় বাঁশঝাড়ের নিচে গত বুধবার তিনতাসের জুয়া খেলায় ব্যাস্ত ছিল চার জন জুয়াড়ি। জুয়াড়িরা হল ভাংবাড়িয়া গ্রামের অদুছোদ্দিনের ছেলে টোকন,মৃত ছুন্নত আলির ছেলে নবিছোদ্দিন,ইজাজুলের ছেলে কবিরুল ইসলাম, মৃত রহমানের ছেলে আকছেদ আলি।
গ্রমের বিভিন্ন প্রান্তে এইভাবে সকলের অগচরে তিন তাসের জোয়ার আসর বসে।এই জোয়ার আসরে সর্বাত্মক সহযোগিতায় থাকে ভাংবাড়িয়া ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আসমোতুল্লা সুজন।পুলিশ ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন থেকে এই জোয়ার আসর পরিচালনা করেন সুজন মেম্বার।টাকা পয়সার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সুজনের সাথে মনোমালিন্য হলে তিনি কৌশলে ভাংবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের টু আই সি জাহিদুল ইসলামের সাথে যোগসাজশে করে জোয়ার আসরে গত বুধবার বেলা ১১ টায় হানা দেয়।পুলিশের তাড়া খেয়ে টোকন(৩২) ও নাজিমুদ্দিন মাথাভাঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দেয়।নাজিমোদ্দিন সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে গেলেও টোকনকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।পরে টোকনের বাড়িতে টু আই সি জাহিদুল ইসলাম গিয়ে টোকের স্ত্রী মিতা খাতুনকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসে।টু আই সি জাহিদুল ইসলাম মিতা খাতুনকে বলে আসেন যে তার স্বামী পানিতে ঝাঁপ দিয়েছে।বাড়ি ফিরে আসলে সে যেন থানায় দেখা করে।নইলে অসুবিধা আছে।অপর দুইজন কবিরুল ইসলাম ও আকছাদ আলি পুলিশের হাতে ধরা পরে।মাঠের কয়েকজন দিন মজুর ছুটে আসলে তাদের গ্রেফতার করার হুমকি ধামকি দেয় টু আই সি জাহিদুল ইসলাম। সেই কারনে মাঠের লোকজন পিছিয়ে যায়। পরে মেম্বারের মধ্যস্থতায় মাত্র দুই হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছে সুজন মেম্বার ও ক্যাম্পের টু আই সি জাহিদুল ইসলাম স্বীকার করে।ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান, আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইন চার্জ (তদন্ত) আব্দুল আলিম,ওসি (অপারেশন) ইকরামুল হক।
টোকনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।টোকনের মৃত্যুতে স্ত্রী কন্যা অসহায় হয়ে পড়েছে।লাশের কেউ বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের টিম ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোহানূর রহমান সোহান ও গ্রামের গণ্যমান্য লোকজনদের নিকট লাশ হস্তান্তর করেন। ভাংবাড়িয়া কবরস্থানে জানাজা নামাজ শেষে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।