রাজশাহী জেলায় ভুয়া মৃত্যু সনদ ইস্যু করায় চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও সদস্য বিষ্ণু চন্দ্র মণ্ডলের নামে মামলার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরের দিকে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মারুফ আল্লাম স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, একটি দলিলকে জাল দাবি করে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ মামলা করেন চারঘাটের নিমপাড়া ইউনিয়নের বাসুদেবপুর এলাকার বাসিন্দা জুলফিকার ভুট্টু। মামলা নম্বর ৬৪/২০২২। এই জালিয়াতি কাণ্ডে জড়িত উপজেলার সরদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাহাবুদ্দিন ওরফে শাহাবুল। তিনি ওই ইউনিয়নের পাটিয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা। জালিয়াতির মামলায় বর্তমানে জেলহাজতে সাহাবুদ্দিন।
আদালত জানাচ্ছেন, জালিয়াতির মামলা তদন্তে নেমে মৃত্যুসনদ জালিয়াতির বিষয়টি তুলে আনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই কাণ্ডে নিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বিষ্ণু চন্দ্র মণ্ডলের সম্পৃক্ততা উঠে আসে। বাদীর দাবি, ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট তার বাবা খাজেম মোল্লা মারা যান। মৃত্যুর প্রায় চার মাস পর মৃত্যুসনদ ইস্যু হয় ওই বছরের ১ ডিসেম্বর। অনলাইন নিবন্ধনের পর মৃত্যুসনদ পান তিনি। অন্যদিকে আসামিপক্ষের দাবি, খাজেম মোল্লা মারা গেছেন ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর। মৃত্যুর প্রায় ৭ বছর পর মৃত্যুসনদ ইস্যু হয়েছে চলতি ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি।
বাদীর অভিযোগ ছিল, তার মৃত বাবা খাজেম মোল্লাকে জীবিত দেখিয়ে জাল দলিল করেছেন ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন। আদালতে তিনি অনলাইনে নিবন্ধিত মৃত্যুসনদ দাখিল করেন। আসামিপক্ষ দাখিল করে আরেকটি মৃত্যুসনদ।
তদন্তের পর পিবিআই আদালতে প্রতিবেদন দেয়, আসামিপক্ষের দাখিল করা মৃত্যুসনদটি সঠিক নয়। ইউপি সদস্য বিষ্ণু চন্দ্র মণ্ডলের স্বাক্ষরের ভিত্তিতে ওই প্রত্যয়নপত্র দেন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। আদালত মনে করছে, এই মৃত্যুসনদটি যোগসাজসী ও অসত্য তথ্য দিয়ে বানানো হয়েছে।
তাছাড়া বাদীর দাখিল করা মৃত্যুসনদটি অনলাইন সার্ভারে পাওয়া গেলেও ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্টারে পাওয়া যায়নি। এসব কর্মকাণ্ড দণ্ডবিধির ১৯৭/৪৬৫/৪৬৬ ধারায় অপরাধ। এই কারণেই চেয়ারম্যান ও মেম্বরের নামে মামলার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে আরও কোনো অপরাধ আছে কি না তাও সরেজমিন তদন্ত করে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নিদের্শ দিয়েছেন আদালত। আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।