সিরাজগঞ্জে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বোনকে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে ভাই। নিহতের নাম নারজু খাতুন (২৮)। হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি। তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন যে, নিজের বোনকে হত্যা করে তারই ভাই।
বুধবার (২০ জুলাই) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মামলার এ তথ্য জানায় সিআইডি।
সিরাজগঞ্জ সিআইডির অফিসার ইনচার্জ ওহেদুজ্জামান মামলার বিবরণ দিয়ে জানান, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বৃ-আঙ্গারু গ্রামের আতাহার সরদারের ছেলে সবুজ বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর লিখিত এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন রাতের কোন সময় এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জন বাদী সবুজের ফুফু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারজু খাতুন (২৮) কে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
মামলাটি শাহজাদপুর থানা পুলিশ কর্তৃক তদন্তাধীন থাকাবস্থায় সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ স্ব-উদ্যোগে অধিগ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তে প্রকাশ পায় যে, মামলার বাদীপক্ষ এবং আসামিরা একই এলাকায় বসবাস করেন।
ধোলাই নদীর জলকরসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে অনেকদিন যাবৎ উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তারই ধারবাহিকতায় ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর সকাল ৮ টার সময় উভয়পক্ষ এক শালিস বৈঠকের আয়োজন করে। উক্ত শালিস বৈঠকে উভয়ের পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময়ে মারপিটে প্রতিপক্ষের আঃ আওয়াল নামে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় শাহজাদপুর থানার মামলা হয়। মামলা নং-৪০(১১)১৯।
ওই মামলায় দীর্ঘদিন পর সন্দেহভাজন আসামি মোঃ সরোয়ার মোল্লা (সঞ্জু মোল্লা)কে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে উক্ত আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন এবং হত্যাকান্ডের বিস্তারিত ঘটনা প্রকাশ করেন।
তার জবানবন্দীতে প্রকাশ পায় যে, আওয়াল হত্যা মামলার পর বাদী পক্ষের ঘর-বাড়ী ভাংচুর, গরু, ছাগল ও মালামাল লুটপাট করেন। পরে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বাড়িঘর ছাড়া হয় এবং অনেকেই জেলহাজতে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণসহ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য নিজেদের কাউকে হত্যা করে মিথ্যা মামলা করার পরিকল্পনা করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাত ১১টায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নারজুর আপন বড় ভাই আতাহারের নির্দেশে আসামিরা নারজুকে তার বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গায় ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার দীর্ঘ দেড় বছর নিবিড় তদন্তে মামলাটির রহস্য উদঘাটিত হয়। ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক আসামিদেরকে গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।