সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা লেইচ নূর মিয়া। স্বপ্ন দেখেছিলেন মাছ চাষ করে লাভবান হবেন। সেই স্বপ্ন সত্যি করতে ঝণ করে টাকা নিয়ে তিনটি পুকুরের মাধ্যমে শুরু করে ছিলেন মাছ চাষ। কিন্তু হটাৎ যেন সেই স্বপ্ন নিমিষেই দুলিসাৎ হয়ে গেলে। স¤প্রতি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। আর সেই বন্যার বানের পানিতে ভেসে যায় পুকুরের সকল মাছ। স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে এখন নিশ্বস হয়ে দিশেহারা হয়ে গেছেন লেইচনুর মিয়া। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কুরবান নগর ইউনিয়নে মনরপুর গ্রামে ২ টি পুকুরে ৪০ লক্ষ টাকার মাছ ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম হাজীপাড়া ১ টি পুকুরে ৫ লক্ষ টাকার রুই, কাতলা, কারফু, গাসকাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে চাষ করছিলেন লেইচ নূর মিয়া। এই মাছ গুলো বড় হয়ে বিক্রি করলে সকল ঋণ সুদ করে তিনি লাভবান হতেন। কিন্তু বানের পানি তার সকল স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়ে গেল। শুধু তাই নয় ২০২০ সালের বন্যায় লেইচ নুর মিয়ার আরোও তিনটি পুকুর থেকে ৩০ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে যায়। যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ২০২২ সালে বড় করে তিনটি পুকুরে তিনি ঋণ করে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন। ক্ষতিগ্রস্থ লেইচ নূর মিয়া জানান, আমি একবারে নিশ্বস হয়ে গেলাম। অনেক আশা নিয়ে তিনটি পুকুরে ৪৫ লক্ষ টাকার মাছ চাষ করেছিলাম ভেবেছিলাম মাছ গুলো বড় করে বিক্রি করতে পারলে অনেক লাভবান হবো কিন্তু বানের পানি আমার সব মাছ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন আমি এত মানুষের ঋণ কিভাবে সুদ করব সেই চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এদিকে আমার আরেক সহযোগী ব্যবসায়ী পাঠনার সোহেল মিয়া জানান, আমরা একসাথে ১০ একর পুকুরে ৪৫ লাখ টাকার মাছ চাষ করেছিলাম। বানের পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে। এখন চিন্তায় আছি কয়েকটি দোকান থেকে মাছের খাদ্য বাকি এনে ছিলাম। তা কিভাবে পরিশোধ করব তা নিয়ে চিন্তিত আমরা। পশ্চিম হাজী পাড়া পুকুরে দায়িত্বে থাকা আব্দুস শহীদ জানান, বানের পানি যখন পুকুরে এসে পড়ছে তখন পানি আটকানোর অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। পানি গতি এতটা ভয়াবহ ছিল যে পুকুরের পার ভেঙে সকল মাছ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পরে কোন রকম জানটা নিয়ে সেখান থেকে বেঁচে ফিরেছি।সুনামগঞ্জ জেলা মৎস কর্মকর্তা সুনীল মন্ডল জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস চাষীদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারা যাতে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে সরকার সেই ব্যবস্থা করবে।