1. admin@crimenews24.net : cn24 :
  2. zpsakib@gmail.com : cnews24 :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সিরাজগঞ্জ র‌্যাব-১২ এর অভিযানে ৬১ কেজি গাঁজাসহ আটক ৪ ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়ে আওয়ামী লীগ বধ্যভূমি তৈরি করেছিল: টুকু সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন নিজের চেহারা একবার আয়না দিয়ে দেখুন: মৌলভীবাজারে জামায়াতের আমীর শ্রীমঙ্গলে শিশু ধর্ষণ মামলায় আটক ২ তানোরে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণায় প্রথম স্ত্রী নিঃস্ব সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ রাজশাহীতে হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আটক- ৮ সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে সুন্দরবনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ

কাজী এনায়েত রাজশাহী:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২
  • ৭৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে

 

৩০ বছরে পা রাখল রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ। ১৯৯২ সালের ১লা জুলাই চারটি থানা ও ১০টি ফাঁড়ি নিয়ে গঠিত হয় ৭৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ।

পর্যায়ক্রমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে জনবল ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ২০১৮ সালে চারটি থানার স্থলে ১২টি থানায় রুপান্তর করা হয়। ১২টি থানা এলাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮ বর্গ কিলোমিটার থেকে ৪৭২ বর্গ কিলোমিটারে।

পুলিশী জনবল ও থানা বৃদ্ধির কারণে ক্রমান্বয়ে রাজশাহী মহানগরীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূলে চলে আসে। শান্তির নগরীর রাজশাহী হয়ে উঠে আরও শান্তিময়।

৩০ বছরের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অনেক সদস্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে হতাহত হয়েছেন। আর অনেকে পেয়েছেন পদক ও পদোন্নতি।

আরএমপিতে চাকরি করার পর অনেকেই পুলিশের শীর্ষ পদে আসীন হন এমন নজিরও রয়েছে। বিশেষ করে মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী, ড. জাবেদ পাটোয়ারী ও ড. বেনজির আহম্মেদের নাম উল্লেখ যোগ্য।

আরএমপির প্রতিষ্ঠার পর চুরি, ছিনতাই, মাদক বেচাকেনাসহ বিভিন্ন অপরাধ নিন্মমুখি হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় সংঘর্ষ, কিশোর অপরাধ এবং ইভটিজিং প্রায় নাই বললেই চলে।

তবে রাজনৈতিক কারণে এবং অস্থিরতায় শান্ত রাজশাহীতে অনেক অশান্তিময় ঘটনার জন্ম হয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গি ও চরমপন্থি তৎপরতা মাথা চারা দিয়ে উঠায় ২০০৪ সালের পর থেকে রাজশাহী মহানগরসহ পাশবর্তী এলাকা ছিলো বেসামাল।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর তৎপরতার কারণে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আসলেও জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে বিপক্ষে শক্তিগুলোর রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভয়াবহ সন্ত্রাসী কার্মকান্ড হিসেবে বিস্তৃতি লাভ করে। যা কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।

পরবর্তীতে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী ভয়াল মহামারী কোভিড ১৯ বা করোনা ভাইরাস মহামারী রুপ নিলে রাজশাহী শোচনীয় পরিস্থিতির শিকার হয়। তখন সরকারী বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ বেশ কিছু জন সেবা মূলক পদক্ষেপ নিয়ে করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়ায়। যা রাজশাহীবাসীকে উদ্বেলিত করেছে। উজ্জ্বল করেছে পুলিশের ভাবমূর্তি।

করোনাকালে আরএমপির পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সময়োপযোগী মানবিক পদক্ষেপ বিশেষত আরএমপির পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক তৈরি করে বাড়ি বাড়ি অক্সিজেন সেবা পৌঁছে দেয়া হয়।

করোনাকালিন সময়ে যেন নায্য মূল্যে অক্সিজেন ক্রয় করতে পারে সে জন্য নায্য মূল্যে অক্সিজেন বিক্রয়ের চুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। মহানগরবাসীর মাঝে প্রায় দেড় লাখ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছেন।

লকডাউন পরিস্থিতিতে মানবিক সংকটে পড়া অসহায়, দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন নিম্ন আয়ের পেশাজীবী প্রায় ১১ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন। শুধু শহরেই নয় প্রত্যন্ত চরাঞ্চল চরমাজারদিয়াড়েও নিজে উপস্থিত থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি চরবাসীর যোগাযোগের জন্য রাস্তা তৈরি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

রাজশাহী নগরীতে অপরাধ প্রবণতা কমাতে নগরজুড়ে ৫০০ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপণ করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মহানগরবাসী।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, অপরাধপ্রবণতা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বর্তমানে রাজশাহী নগরবাসী এর সুফল ভোগ করছে। নগরজুড়ে ৫০০ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপণ এর সুবাদে মহানগরীর বিভিন্ন ক্লুলেস হত্যাকান্ডের আসামি ও চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের শনাক্তও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে।

এদিকে আরএমপির পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের দিক নির্দেশনায় ২০২০ সালে ২৭ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

রাজশাহী মহানগরে যাতে কোনো ধরনের সাইবার ক্রাইম সংঘটিত না হয় এবং কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করার লক্ষ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে পুলিশের স্বতন্ত্র এই ইউনিট কাজ শুরু করে। সাইবার ইউনিটের সাহায্যে গত এক বছরে বিভিন্ন ধরনের প্রমাণহীন তিন শতাধিক অপরাধের রহস্য উদঘাটনের মাধ্যমে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ক্রুলেস হত্যাকান্ড রয়েছে।

করোনা কালীন সময়ে বর্তমান আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক যোগদানের পর করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলাসহ মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা ও অপরাধ দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় মহানগর বাসী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

আরএমপির সাইবার ইউটিনের ইনচার্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার উৎপল কুমার চৌধুরী জানান, আরএমপির সাইবার ইউনিটের সাহায্যে এ পর্যন্ত মহানগরীর বাসাবাড়ি ও সড়কে মোটরসাইকেল চুরির শতাধিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ৩০টির বেশি ছিনতাই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর ফলে মহানগরীতে অপরাধীদের দৌরাত্ম কমেছে।

কিশোর অপরাধীদের ডাটাবেজ তৈরির কারণে অপরাধীদের কর্মকান্ড প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) এলাকায় কিশোর অপরাধ দমনে তৈরি করা হয় কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজ। ইতোমধ্যে প্রায় ৪০০ কিশোরের বিস্তারিত তথ্য ডিজিটাল ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিশোর অপরাধের সাথে জড়িত কিশোরদের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, অভিভাবকের নাম, প্রাতিষ্ঠানিক ঠিকানা, সম্ভাব্য চলাচলের এলাকা, মোবাইল নম্বর, ছবিসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত স্থানীয় থানা পুলিশের মাধ্যমে সংগ্রহ করে এই ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, অপরাধে জড়িয়ে পড়া কিশোরদের সংশোধন করতে চাই আমরা। এরা যেন রাষ্ট্রের আইন সম্পর্কে সচেতন হয়। এর সঙ্গে মানবিকতা ও মূল্যবোধ যদি জাগ্রত করে দেয়া যায়, তাহলে অপরাধ অনেকাংশে কমে যাবে।

এসময় আরএমপির পুলিশ কমিশনার আরও জানান, বর্তমানে ভাড়া বাড়িতে আরএমপির ১২টি থানার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। আরএমপির ১২টি থানার মধ্যে তিনটি থানা সরকারী জায়গা বরাদ্দ পেলে সেই জমিতে থানার নিজস্ব ভবনের তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। বাকি থানা গুলেও যেন নিজস্ব ভবনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সে চেষ্টায় চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রাজার বাগ পুলিশ লাইনে পুলিশ সদস্যরাই সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সেই সময়ের শহীদ হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের স্মরণে রাজশাহী পুলিশ লাইস্ এ পুলিশ স্মৃতি মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর গড়ে তোলা হচ্ছে। আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক এর উদ্যোগে এই যাদুঘরটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

আরএমপির পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের দিক নির্দেশনায় পুলিশের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য এই যাদুঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এই যাদুঘরের মাধ্যমে ভবিষৎ প্রজন্ম স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের অবদান জানতে পারবে। শহীদ পরিবারগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তাদের স্মৃতি সংগ্রহ করছি।

সব মিলিয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ ত্রিশ বছরে কাঙ্খিত সুফল দিতে সক্ষম প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এই পুলিশী সেবাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর ....
© All rights reserved © 2022 crimenews24.net
Design & Developed By : Anamul Rasel