সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের আলোকদিয়ার গ্রামের শামীম হোসেন ওরফে ফিরোজের বিরুদ্ধে একে একে চারটি বিয়ে করে স্ত্রীদের থেকে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নানা কৌশলে চাপের মুখে রেখে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্ত্রীকে রেখে বর্তমানে চতুর্থ স্ত্রীর সাথে সংসার করছেন। বাকী তিন স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক না রাখায় বিক্ষুব্দ হয়ে তারা একযোগে বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। ওই পুলিশ কনস্টেবলের প্রথম স্ত্রী উপজেলার নন্দলালপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের কন্যা এক কন্যা সন্তানের জননী বিথী বেগম বাদী হয়ে পুলিশের আইজি ও পুলিশ সুপার পাবনা বরাবর গত ১৭ এপ্রিল একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। ওই অভিযোগে অপর দুই স্ত্রী স্বাক্ষী হয়ে অভিযোগকে আরও জোড়ালো করে তুলেছে। পুলিশ কনষ্টেবল শামীম হোসেন ওরফে ফিরোজের প্রথম স্ত্রী বিথী বেগম (২৩) সাংবাদিকদের জানান, আলোকদিয়ার গ্রামের শামীম হোসেন ওরফে ফিরোজের সাথে ২০১৬ সালে পারিবারিকভাবে নগদ ৮ লক্ষ টাকা ও আসবাবপত্র, প্রদান করে ১০ লক্ষ টাকা কাবিনে তার বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর শশুর বাড়ীতেই অবস্থান করতে থাকে। এরপর বিথী গর্ভধারন করলে পার্শ্ববর্তী শাকতোলা গ্রামে বাবার ভাড়া বাসায় অবস্থান করতে থাকে। এ ফাঁকে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হলে পুলিশ কনস্টেবল শামীম বিথীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বেশ কিছুদিন পর বিথী জানতে পারে তার স্বামী ঢাকা উত্তরার হাসিনা আক্তার হাসি খাতুনকে বিয়ে করে সংসার করছে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেলে বিথী ও তার মাকে ব্যাপক মারপিট করে তাড়িয়ে দেয় শামীম। পরে থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হলে শামীমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শামীম বিথীর সাথে সমাঝোতায় আসে। কিছুদিন স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ক্যামিলি আক্তারকে বিয়ে করে তাকে নিয়ে সংসার করতে থাকে। পুলিশ কনস্টেবল শামীমের একের পর এক বিয়ের খবরে বিক্ষুব্দ হলে প্রথম স্ত্রী বিথিকে ডিভোর্স প্রদান করে। এ নিয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হলে পুনরায় বিথীকে আবারও স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে সংসার করতে থাকে শামীম। এরপর শামীম পাবনা পুলিশ লাইনে বদলী হয়ে ঢাকা জেলার ভাটারা থানার চাঁদনী আক্তারকে চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে বর্তমানে তাকে নিয়েই সংসার করছে । এ ব্যাপারে শামীমের দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা আক্তার হাসি সাংবাদিকদের জানান, শামীম পুলিশ ছদ্মবেশী একজন প্রতারক। সুন্দরী ও ধনাঢ্য নারীদের টার্গেট করে বিয়ে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রথম বিয়ের খবর গোপন রেখে তাকে বিয়ে করে সাব-ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতির কথা বলে মোটর বাইকসহ নগদ ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে। এরপর তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে নাটোরে বিয়ে করে। পদোন্নতির কথা বলে তার নিকট থেকেও টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শামীম। এরপর থেকে শামীম তার সাথেও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এদিকে প্রথম স্ত্রী বিথী আরও জানান, ৫ বছর বয়সী মেয়ে ফারিয়াকে নিয়ে বাবার বাড়ীতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। ইতোমধ্যেই সহকারি পুলিশ সুপার (বেড়া সার্কেল) অফিসে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আমি এবং শামীমের ২য় স্ত্রী হাসি পুলিশী তদন্তে শামীমের যাবতীয় প্রতারণা তুলে ধরেছি। আর কোন নারী যেন এমন প্রতারণার শিকার না হন সেজন্য পুলিশ সদস্যের প্রতারণার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে পুলিশ কনস্টেবল শামীমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।