অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে বিপর্যস্ত হওয়া শ্রীলঙ্কায় এ বছর অর্থাৎ আগামী ছয় মাসের খাদ্য-জ্বালানিসহ নিত্যপণ্য সংগ্রহ করতে ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে এ কথা জানান বলে বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এরই মধ্যে নানা দেশের আর্থিক সহায়তা চেয়েছে শ্রীলঙ্কা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। তবে সবমিলিয়ে অনিশ্চয়তা কাটতে বেশ সময় লাগবে দেশটির।
মঙ্গলবার দেশের আর্থিক সংকট নিয়ে পার্লামেন্টে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ও একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা রনিল।
তিনি বলেন, দুই কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশের এ বছর চলতে আমদানি করতে হবে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি। এ ছাড়া খাবারের জন্য ৯০০ মিলিয়ন, কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য ৬০০ মিলিয়ন আর রান্নার গ্যাস আমদানি করতে লাগবে ২৫০ মিলিয়ন ডলার।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বলেন, অনেক মানুষকেই না খেয়ে থাকতে হবে। তবে এরই মধ্যে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। যাদের আয় নেই তারাও যেন অভুক্ত না থাকেন।
সম্প্রতি ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে ৫৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। চীন থেকেও দেড় বিলিয়ন ডলার আসার কথা রয়েছে সে দেশে।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশরাজের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে এশিয়ার এই দেশ।
দেশটিতে নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে বিপর্যস্ত জনজীবন। মূল্যস্ফীতি, দুর্বল সরকারি অর্থব্যবস্থা এবং করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।
লঙ্কান সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের খাত পর্যটনশিল্প ধসে পড়েছে, রেমিট্যান্স পৌঁছেছে তলানিতে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ নেমে এসেছে ২ বিলিয়ন ডলারে।
বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে জ্বালানি আমদানি কমে যাওয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কায় দিনের অর্ধেক বা এর বেশি সময় চলছে লোডশেডিং; খাবার, ওষুধ এবং জ্বালানিসংকটে ক্ষোভ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
গত কয়েক বছর শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বেশ টালমাটাল ছিল। এই অবস্থায় দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে। ২০২০ সালে শুরুর দুই মাসে রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমে যায়।
( সি/নি/ টোয়েন্টিফোর)