ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শাহআলম মাতুব্বর (২৪) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে এক শিশু কন্যাকে (৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৬ মে উপজেলার আলগী ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ইশারায় শালিসের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাঁচাপার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর। এতে জনমনে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ভুক্তভোগী শিশুর বাবা পেশায় একজন কৃষক। তিনি জানান, এ ঘটনা জানাতে গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) আলগী ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন তিনি ও তার পরিবার। কিন্তু চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়া ব্যস্ততার অযুহাতে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করান। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তারা চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ পাননি।
এক পর্যায়ে রহস্যজনক কারণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিষয়টি গ্রাম্য শালিসে গড়ায়। সেই শালিসে অভিযুক্ত শাহ আলমের আড়াই লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেন শালিসপক্ষ। ফলো করুন- মেয়েটির বাবা আরও জানান, জরিমানার টাকা ও শালিসের রায় তারা মানতে রাজি হননি। কিন্তু গত চার দিন যাবৎ ধর্ষনের ঘটনা মিমাংসা করার জন্য স্থানীয় একটি মহল তাদেরকে হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করছে। এমনকি থানায় যেতে চাইলে প্রভাবশালী মহলের রোষানলের স্বীকার হয়েছেন তারা। এখন রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। সোমবার সরেজমিনে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী ওই শিশু কন্যার পারবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৈখালী গ্রামের বাসিন্দা হায়দার মাতুব্বরের ছেলে শাহআলম ও ভুক্তভোগী পরিবারের ওই শিশু কন্যার বাড়ি একই গ্রামে। ভুক্তভোগী মেয়েটির সম্পর্কে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই হয় শাহআলম। এর সুবাদে প্রায়ই শাহআলম ওই বাড়িতে যাতায়াত করত। গত বৃহস্পতিবার (২৬ মে) শাহআলম পুনরায় ওই বাড়িতে যায়। পরিবারের কেউ বাড়িতে না থাকার সুযোগে মেয়েটিকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে শাহআলম। এতে মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অচেতন অবস্থায় তাকে রেখে পালিয়ে যায় শাহআলম।
পরে ওই মেয়ের মা বাড়িতে ফিরে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। মেয়েটির জ্ঞান ফিরলে মায়ের কাছে ধর্ষণের ঘটনা জানায় সে। এসময় মেয়েটি আরও জানায়, আগেও একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেছে শাহআলম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এক জনপ্রতিনিধি জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়ার ইশারায় স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গত বৃহস্পতিবার ও রোববার রাতে শালিস হয়েছে। সেখানে অভিযুক্ত শাহআলম মৌখিক স্বীকারোক্তিতে তার দোষ স্বীকার করেছে। পরে শালিসপক্ষ অভিযুক্তকে নগদ আড়াই লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে। কিন্তু ভুক্তভোগীরা সেই শালিস মেনে নেয়নি। আলগী ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিক মিয়া জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। ধর্ষণের ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে তার গ্রামের কোনো পরিবারই বিচার নিয়ে তার কাছে যায়নি।
তবে শাহআলমের বাবা হায়দার মাতুব্বর গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একটি শালিস হয়েছে। তিনি সেই শালিসের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।