মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলগর ইউনিয়ন পরিষদে চলমান অপহরণ মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান পক্ষপাতিত্বমূলক শালিশ করায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের ব্যাক্তিগত সহকারীসহ ৬জন আহত হয়েছে। শনিবার(২৮মে) বেলা পৌণে ১২টার দিকে উপজেলার ৪নং ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলামের অফিস কক্ষে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মোট ৬ জন আহত হন। আহত কাউসার(১৯), ফয়সাল(১৯), আতিক(২০), সাইদুল মুন্সী(৪০), রাজু দেওয়ান(৩২) ও নাহিদ মোড়ল(২৪)দের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। আহত কাউসার ষোলঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের দেলোয়ারের ছেলে, ফয়সাল একই এলাকার সুলতানের ছেলে, আতিক মনিরের ছেলে, সাইদুল মুন্সী ষোলঘর পুরোহিত পাড়া মৃত হালিম মুন্সীর ছেলে রাজু দেওয়ান ষোলঘর জোড়দিঘীপাড় নজরুল দেওয়ানের ছেলে ও ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলামের ব্যাক্তিগত সহকারী এবং নাহিদ মোড়ল ইউনিয়নের সমসাবাদ গ্রামের এনায়েতের ছেলে ও ইউপি সদস্য মখদম খালাশীর ব্যাক্তিগত সহকারী। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ দায়েন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ মে হাসাড়া কবরস্থান থেকে ষোলঘর ইউনিয়নের কেয়টখালী এলাকার হাবু ষোঘের ছেলে সাগর ঘোষ, অপূর্ব ঘোষ গং পরস্পরের সহায়তায় একই এলাকার বাদল খালাশীর মেয়ে রিয়া মনি(২০)কে অহরন করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাদল খালাশী বাদী হয়ে সাগর ঘোষসহ ৬ জন কে বিবাদী করে শ্রীনগর থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং, ৩(০৫)২২। উক্ত মামলায় সাগর ঘোষ ও অপূর্ব ঘোষকে পুলিশ গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরন করলে অপূর্ব ঘোষ জামিনে মুক্ত হয়। শনিবার বেলা ১১টার দিকে উক্ত মামলায় বাদী বাদল খালাশীসহ মেয়ে রিয়া মনির শ্বশুর জুয়েল ভূইয়া ও জামিনে আসা অপূর্বসহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম সালিশ শুরু করেন। সালিশে ইউপি চেয়ারম্যান মামলার বাদী বাদল খালাশীর পক্ষ নেয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে তর্ক- বিতর্কের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় চেয়ারম্যানের হুকুমে তার ব্যাক্তিগত সহকারী রাজু দেয়ান ও ইউপি সদস্য মখদমের ব্যাক্তিগত সহকারী নাহিদ মোড়ল (২৪), কেয়টখালী গ্রামের সাগর(২৬), খৈয়াগাঁও গ্রামের অমিত(২২), আশিক(২০), শাকিল(২২), মৃদুল(২৩), ইমন(২২), জিহাদ(২২), সজল(২৩), সজীব(২২)সহ আরো অজ্ঞাতনামা ২০/২৫জন হাতে কাঠের চলা, হকিস্টিক, দা, লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে প্রতিপক্ষের আতিক, সাইদুল মুন্সীদের উপর আক্রমন করে এলোপাথারীভাবে মারপিট করে তাদের গুরুত্বর জখম করে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে রাজু দেওয়ান ও নাহিদ পথচারী কাউসার ও ফয়সালকে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে জখম করে এবং তাদের পকেটে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে রাজু দেওয়ান ও নাহিদ দৌড়ে সাইদুল মুন্সীকে মারতে গেলে পড়ে গিয়ে আহত হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।আহত সাইদুল মুন্সী জানান, আমি নিজ বাড়ী থেকে সিমেন্ট ক্রয়ের জন্য ষোলঘর বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে পরিষদের সামনে গিয়ে দেখি রাজু দেওয়ান ,সাগর, অমিত গং পথচারীসহ কয়েকজনকে কাঠের চলা দিয়ে এলোপাথারী মারপিট করছে।আমি আহতদের উদ্ধার করতে গেলে চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বলেন, “সাইদুল এনে কেন ওকে পিটা”। চেয়ারম্যানের হুকুমে রাজু দেওয়ান,সাগর, অমিত গং আমাকে বেধরক মারপিট করে আহত করে এক পর্যায়ে আমি আত্মরক্ষার্থে দৌড় দিলে রাজু ও অমিত দৌড়ে আমার পিছু নিলে পড়ে যায়।
অভিযোগের ব্যাপারে ষোলঘর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বলেন, আমার সাথে কারো কোন কথা কাটাকাটি বা সংঘর্ষ ঘটেনি। সালিশে আসা উভয় পক্ষ বালুর মাঠে সংঘর্ঘে জড়িয়ে পড়ে। অপহরণের সালিশ আপনি করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপর একটি সালিশ ছিল। অপরহরণের মামলার সালিশ না। উভয় পক্ষ আসছিল, সে রকম ভাবে কোন শুনানি হয়নি।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনার ব্যাপারে শুনেছি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।