ঝিনাইদহের সদর উপজেলার কালীচরণপুর এলাকায় চলছে অবাধে জমজমাট জুয়ার আসর। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি মহল ও কয়েকজন সরকারি কর্মচারীর নেতৃত্বে অনৈতিকতার জুয়া বোর্ড পরিচালনা করছে এলাকার একটি শক্তিশালী সিণ্ডিকেট। এখানে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়িরা খেলায় দিন-রাত বুদ হওয়ায় প্রতিদিন হাত বদল হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জুয়ার আসরে খেলার পাশাপাশি আশেপাশে চলছে নেশার মাদক সেবন। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশেই দীর্ঘ দিন থেকে দিন-রাত রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর চললেও এটা বন্ধে কোনো ভূমিকা লক্ষ করা যায় না। তবে অভিযোগ রয়েছে, একটা মহলকে ম্যানেজ করেই চালাচ্ছে এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দুই বছর আগে কালীচরণপুর গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে ওই গ্রামের খেলার মাঠের পশে কালীচরণপুর যুব উন্নয়ন সংঘ নামে ক্লাবের পাশে চায়ের দোকান করেন। তারপর থেকেই ওই দোকানে তিন তাস নামে চলে আসছে অবাধ জুয়া আসর। কখনো কখনো ক্রিকেট ম্যাচ ও ইটের খাপরা দিয়েও চলছে জুয়ার আসর। এলাকার উঠতি যুবক, আলোচিত জুয়াড়িরা এখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আসা জুয়াড়িরা এখানে লাখ লাখ টাকার হাত বদল করছে এবং প্রতিদিন এ চক্রের ফঁাদে পড়ে অনেকেই টাকা খুইয়ে হচ্ছেন নিঃস্ব। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা একটি সংঘবদ্ধ চক্র ও কয়েকজন সরকারি কর্মচারী মিলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালাচ্ছে নিষিদ্ধ জুয়ার আসর। এ জুয়াকে কেন্দ্র করে স্পটে নেশা গ্রহণ সমান তালে চলায় জুয়া ও মাদকের মোহে পড়ে অনেকে বসছেন পথে। চলমান জুয়া ও মাদকের আসর নিয়ে এ এলাকার অভিভাবক ও তাদের পরিবার উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বদনপুর গ্ৰামের আনিস হোসেন বেল্টু, কালীচরনপুর প্রাইমারি স্কুলের পিয়ন সুজন বিশ্বাস কালীচরণপুরের প্রাশান্ত গুহ, নির্মল, সামাদ হাজি, কাজল, শাহিনুর নালো মজুমদার,কার্তিক, বড় কামারকুন্ডু গ্ৰামের লিটন, বিআরডিবি অফিসের কর্মচারী মারুফ বিশ্বাস এই সিণ্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকা থেকে অভিযোগ উঠেছে জুয়া আসরকে ঘিরে বিভিন্ন মাদকের সহজ প্রাপ্যতা হওয়ায় দিন দিন এলাকার উঠতি যুবক ও ছাত্র সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। কোনো অবস্থাতেই তাদের সন্তানদের এই মরণ নেশার থেকে দূরে রাখতে পারছে না। অনেক সময় অধিকাংশ পরিবারে বিরাজ করছে অশান্তি। পরিবার থেকে অর্থ না পাওয়ায় জুয়া বোর্ডের দিকে ঝুঁকছে আর জুয়াড়িদের নির্বিঘ্নে খেলায় সহযোগিতা করতে বোর্ড পরিচালনাকারী চক্র এদেরকে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন খাবার, মাদক সরবরাহ, জুয়াড়িদের নির্দিষ্ট আসরে পেঁৗচ্ছে দেওয়া, পাহারাদার হিসাবে দিন-রাত বসিয়ে রাখা হচ্ছে। যুবকদের দিন শেষে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিচ্ছে। আর এই টাকা দিয়েই অনেকে নেশা করছে। মাঝে মাঝে এলাকায় কিছু ছোট-বড় চুরির ঘটনাও ঘটছে বর্তমানে জুয়া আসরের সাথে মাদকের ভয়াবহতাও বৃদ্ধি পাওয়ায়। জুয়া ও মাদকের আসরকে ঘিরে এলাকার অভিভাবক তাদের সন্তান ও পরিবেশ নিয়ে বেশ চিন্তিত। সব কিছু জানা সত্ত্বেও অহেতুক বিপদে পড়ার ঝামেলা এড়াতে নীরবতা পালন করে চলেছে তারা। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান,বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। খেঁাজ নিয়ে জুয়া ও মাদকের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সব সময় বেশি সোচ্চার।