উজ্জ্বল আহমেদ বানিয়াচং থেকে ফিরে/
বানিয়াচংয়ে জলাবনকে কেন্দ্র করে দাস পার্টির অন্যতম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বানিয়াচং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হায়দরুজ্জামান খান ধন মিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে জামায়াত নেতা ও তার লোকজন। এ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেয়া দিয়েছে। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় জানায়নি পুলিশ। ওসি মোহাম্মদ এমরান হোসেন আরও জানান, এ মামলায় ৯৫ জনের নাম উল্লেখ এবং বাকীদের অজ্ঞাত রেখে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খান এবং ইউপি চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান ধন মিয়াকে আসামী করা হয়েছে।
এদিকে, দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ও বাড়ীঘর ভাংচুরের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি,অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) পলাশ রঞ্জন দে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সারাদিন দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত আহত হয়েছেন শতাধিক লোকজন।
জানা যায়, সৈদ্যরটুলা গ্রাম্য সর্দার নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়া ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খানের লোকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। কিছুদিন পূর্বে সৈদ্যরটুলা মহল্লায় এড. নজরুল ইসলাম খানকে সর্দার নির্বাচিত করে এলাকাবাসী। অন্যদিকে চেয়ারম্যান ধন মিয়াকে এই মহল্লা কমিটির উপদেষ্টা করা হয়।
এছাড়াও লক্ষ্মীবাওর জলাবন নিয়ে ধন মিয়া চেয়ারম্যান ও নির্বাচিত সর্দার এবং এলাকাবাসীর মধ্যেও দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। এদিকে গত বুধবার চেয়ারম্যান ধন মিয়াকে ছান্দের উপদেষ্টা পদ থেকে বহিষ্কার করে বর্তমান সৈদ্যরটুলা ছান্দের লোকরা।
জানা যায়, জলাবনকে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন বানিয়াচংয়ের ছান্দের সর্দাররা। এই বন থেকে প্রতি বছর তারা কয়েক কোটি টাকা আয় করেন।
চলতি বছর সরকার জলাবনকে পর্যটন কেন্দ্র করার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বর্তমানে দখলে রাখা প্রভাবশালীরা। যে কারণে তারা এটিকে নিজেদের দখলে রাখতে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছে।
সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন হায়দরুজ্জামান খান ধন মিয়া। এতে ধন মিয়ার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন জামায়াত নেতা ও বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খান এবং বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট নজরুল ইসলাম।
সকালে জামায়াত নেতা ইকবাল এবং বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল লোক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দরুজ্জামান খান ধন মিয়ার বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় তারা চেয়ারম্যামের বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। হামলাকারীরা হায়দরুজ্জামান খানের পক্ষের অন্তত ৩০ জনকে পিটিয়ে আহত করে। তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।