ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দুধসর গ্রামে সুদখোর মহাজনের অত্যাচারে বাড়ী ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এক চা দোকানী ও তার পরিবার। বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করলে সেখানে এসেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে সুদখোর ওই ব্যক্তিরা। জানা গেছে, দুধসর গ্রামের রিক্সাচালক সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী ডলি খাতুন ৩ সন্তান নিয়ে দুধসর আবাসন প্রকল্পের একটি ঘরে বসবাস করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। চা দোকানী সাইদুর ও স্ত্রী ডলি খাতুনের সেলাই মেশিনের কাজ করে কিছু টাকা জমিয়ে উত্তরপাড়ায় একটি জমি কিনে ঘর করে সেখানে বসবাস শুরু করে। গত ৩ বছর আগে ওই এলাকার মনজের আলীর কাছ থেকে ব্যবসার জন্য ৫০ হাজার টাকা ধার করেন চা দোকানী সাঈদুর রহমান। সেই টাকা দিয়ে চায়ের দোকান ভালই চলছিল। করোনা মহামারীতে ব্যবসায় বন্ধ হয়ে গেলে সেই টাকা ফেরত দিতে দেরী হয় সাঈদুরের। এরপর থেকেই ৫০ হাজার টাকায় মাসে ৫ হাজার টাকা সুদ দাবী করে সুদখোর মনজের আলী। সেই সাথে স্ট্যাম্পে ২ লাখ টাকা লিখে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এরপর থেকেই প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা সুদ দিতে হচ্ছে সুদখোর মহাজন মনজের আলীকে। ভুক্তভোগী সাঈদ বলেন, আমি ৫০ হাজার টাকা ধার করে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ টাকা দিয়েছি তবুও আমার টাকা পরিশোধ হচ্ছে না। টাকা দিতে না পারায় আমার বাড়িতে এসে হামলা, মারধর করা হচ্ছে। তাই বাড়ী ছেড়ে ঝিনাইদহ শহরে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে রিক্সা চালাচ্ছি। সাঈদের স্ত্রী ডলি খাতুন বলেন, সুদখোর মনজের আলী, গোলাম আলী, তুপাল বিশ্বাস, বাদশা বিশ্বাস একটা চক্র। তারা এলাকায় সুদের ব্যবসা চালায়। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের ঝিনাইদহ শহরে এসে মারধর করা হচ্ছে। হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমার ওই চক্রের হাত থেকে রক্ষা চায়। আমি তাদের অত্যাচারের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। তারপরও তারা আমাদের মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। ফলে আমি পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মনজের আলী তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সুদের ব্যবসা করি না। আমি তাদের এলাকা ছাড়া করিনি। তাদের কোন হুমকি-ধামকিও দিইনি। তাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। খোঁজ খবর নিয়ে সুদখোরদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।