ঝিনাইদহের শৈলকুপার হাটবাজারে লাগামহীন দাম বাড়ায় মৌসুমী ফল তরমুজ এখন যেন বিলাসী খাদ্যদ্রব্য। রমজানে পুষ্টিবিদরা ইফতারে যতই ফল খাওয়ার পরামর্শ দিক না কেন, দামের কারণে তা খাওয়ার উপায় নেই সাধারণ মানুষের। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এই ফল এখন পিস প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩’শ থেকে ৫’শ টাকা দরে। আর আম,কঁাঠাল, লিচুসহ এখনো অন্যান্য দেশী ফলের মৌসুম না আসায়, এই সুযোগে তরমুজের দাম দ্বিগুন-তিনগুণ নয় পঁাচ-দশগুণ বাড়িয়েও বিক্রি করা হচ্ছে। এসবের ভিডিও- ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের সাথে অসাদাচারণ করেন সিন্ডিকেট ও অতিলোভী ব্যবসায়ীরা। শৈলকুপার হাট-বাজারে উঠেছে মৌসুমী ফল তরমুজ তবে তার দাম যেন আকাশছেঁায়া। একদিকে বৈশাখের রুদ্র রূপ, অন্যদিকে শুরু হয়েছে রোজা। এই তপ্ত আবহাওয়ায় একটু স্বস্তির জন্য মানুষ স্বাভাবিকভাবেই তরমুজের খেঁাজ করছেন। ফলে বেড়েছে তরমুজের চাহিদা। কিন্তু এই স্বস্তি খুঁজতে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। উপজেলার শেখপাড়া ,গাড়াগন্জ, ভাটই, লাঙ্গলবাধ, হাটফাজিলপুর সহ শৈলকুপার বাজারে প্রকারভেদে মাঝারি ও বড় সাইজের প্রতি পিস তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩’শ থেকে ৫’শ টাকা দরে। রোজা শুরু হওয়ার পর ছোট সাইজের একটি তরমুজও বিক্রি হচ্ছে ২’শ থেকে আড়াইশ টাকা দরে। কবিরপুর, চৌরাস্তা মোড়, সোনালী ব্যাংকের সামনে, নতুন বাজার, থানা মোড় সহ কয়েকটি স্থানে তরমুজ পাইকার ও খূঁচরা বিক্রি করা হচ্ছে। এই সংবাদ সংগ্রহে ভিডিও ও কথা বলতে গেলে তেঁড়ে আসেন শৈলকুপার চৌরাস্তা মোড়ের এক ব্যবসায়ী, তারা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা ও গালিগালাজ করে। বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কৃষকদের কাছ থেকে ফড়িয়ারা ‘খেত মূলে’ তরমুজ কিনে পাইকারি মোকামে এক ধাপ লাভে বিক্রি করেন। আবার পাইকারি মোকাম থেকে আরেক ধাপ লাভে ‘শ মূলে’ খুচরা ব্যবসায়ীরা কেনেন। এরপর খুচরা ব্যবসায়ীরা আবার ভোক্তা পর্যায়ে তা কেজি বা পিস আকারে আরেক দফা লাভে বিক্রি করেন। ফলে তিন হাত ঘুরে এই তরমুজের দাম এলাকাভেদে ১০ গুণও বেড়ে যায়। তবে মৌসুমের শুরু, অন্যান্য ফল না থাকা,পরিবহন খরচ,পথে পথে চঁাদা দেয়া সহ চাহিদা মতো তরমুজ না পাওয়ায় দাম বাড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। কবিরপুরের পাইকার তরমুজ ব্যবসায়ী বাকুল জানান, কঁাচামাল হওয়ায় ট্রাকে ট্রাকে ঝামেলা করে পুলিশ, অনেক স্থানে চঁাদা দেয়া লাগে নইলে ট্রাক আটকে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এদিকে রমজানে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে দাম বাড়ানোর কারণে শৈলকুপায় তরমুজের পাইকার ও খূঁচরা বাজারে মঙ্গলবার অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। তালিকামূল্য না থাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন ্আইনে কবিরপুরের ২জন তরমুজ ব্যবসায়ী সজিবও বাকুল কে ৩হাজার ৫’শ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৭দিনের জেল দেন শৈলকুপার সহকারী কমিশনার(ভ’মি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ প্রতিম শীল। তরমুজের দাম প্রসঙ্গে ক্যামেরায় কথা বলতে না চাইলেও প্রশাসনের এই কর্মকর্তা জানান, কৃষিপণ্যে ৫ থেকে ১০ পার্সেন্ট লাভে বিক্রি করার কথা কিন্তু সেই নিয়ম এখানে মানা হচ্ছে না। তবে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, বাড়তি দামে ফল বিক্রি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ শুনেছেন, তিনি বলেন ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযান আরো চালানো হবে।